কক্সবাজার সৈকতসহ শহর থেকে বুধবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার সাঁড়াশি অভিযানে ৪৪৩ রোহিঙ্গা আটকের পরও শিবিরে রোহিঙ্গাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। রোহিঙ্গারা শিবির ছাড়ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবারও কেবল বালুখালী শিবির থেকে বেরিয়ে পড়ার সময় আটক হয়েছেন আরো ২০৩ জন রোহিঙ্গা। এ নিয়ে গত ২ দিনে আটক হয়েছেন ৬৪৬ জন রোহিঙ্গা। শিবির থেকে গণহারে রোহিঙ্গাদের বেরিয়ে পড়ার ঘটনা এখন উদ্বেগজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরের প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা সামাল দিতে নিয়োজিত মাত্র ২ হাজার এপিবিএন (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান) সদস্য হিমশিম খাচ্ছেন।
উখিয়ার কুতুপালং এলাকার রোহিঙ্গা শিবিরের দায়িত্বে নিয়োজিত এপিবিএন-১৪ ব্যটালিয়ানের অধিনায়ক (এসপি) নাইমুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার এলাকার শিবিরগুলোতে কাঁটাতারের যে ঘেরাও দেওয়া হয়েছিল তার অনেকাংশ রোহিঙ্গারা ভেঙে ফেলেছে। শিবিরের পেছনের এসব ভাঙা অংশ দিয়েই রোহিঙ্গারা বেরিয়ে যায়। তিনি জানান, কাঁটাতারের ভাঙা অংশ পুনরায় মেরামত করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদেরও বলা হয়েছে।
অপরদিকে, বালুখালী শিবিরের ৪ লাখ রোহিঙ্গার দেখভালের দায়িত্বে থাকা এপিবিএন-৮ ব্যাটালিয়ানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার এলাকার শিবিরের ১২টি স্থানে কাঁটাতার সম্পূর্ণ ভাঙা রয়েছে। এসব এলাকা দিয়েই রোহিঙ্গারা বের হয়ে যায়। তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবারও শিবির ছেড়ে বাইরে যাবার সময় ২০৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছেন এপিবিএন সদস্যরা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, ইতিমধ্যে পটিয়া, লোহাগড়া, চন্দনাইশ, চকরিয়া, লামা-আলীকদম ও সাতকানিয়া থেকে পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম এলাকায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা গ্রাম-গঞ্জে বসতি স্থাপন করেছেন। বুধবার কক্সবাজারে পুলিশের হাতে আটক হওয়া ৪৪৩ জন রোহিঙ্গার মধ্যে বেশিরভাগই শিবিরের বাইরে বসবাসরত বলে মনে করছেন। যদিওবা মাসে যথাসময়ে এসে এসব রোহিঙ্গারা শিবির থেকে রেশন নিয়ে আবার গ্রামে গড়া বসতিতে চলে যান বলে জানান তিনি। কক্সবাজার শহরেও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে বসতি করে শিবিরে যথারীতি যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, দক্ষিণ চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ার বিষয়টি এ মুহূর্তে দৃশ্যমান মনে না হলেও অদূর ভবিষ্যতে তা হবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বেও জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এসব বিষয়গুলো যথারীতি সংশ্লিষ্ট মহলেও জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।