ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী স্তম্ভ হলো জাকাত। রোজা আত্মার শুদ্ধি এনে দেয় আর জাকাত নিয়ে আসে সম্পদের শুদ্ধি। সৎপন্থায় উপার্জিত জমাকৃত নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের উপর নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলে সুনির্দিষ্ট হারে জাকাত প্রদানের বিধান রয়েছে। এটা ইসলামের একটি অবশ্য পালনীয় বিষয়।
রমজানের রোজা শেষ হলেই খুশির ঈদ। জাকাতের টাকা হাতে পেয়ে গরীব, দুখী সবাই যেন সেই খুশিতে শামিল হতে পারে সেজন্য আমরা সবাই অপরের সাহায্যে নিজের হাত বাড়িয়ে দিই। এভাবে একদিন আর কারো কাছে চাইতে হবে না, বলতে হবে না। সবার আত্মা এমনিতেই সৎকাজে সজাগ হয়ে উঠবে এবং সূচিত হবে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ।
পবিত্র কোরআন শরীফের ৮২ জায়গায় নামাজ আদায়ের সাথে সাথে জাকাত প্রদানের কথা উল্লেখ রয়েছে। জাকাত প্রদানের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুশাসন পালনের পাশাপাশি একজন মানুষের বদান্যতা, পরোপকারিতা ও হৃদয়ের বিশালতা প্রকাশিত হয় এবং দুস্থ মানুষের কল্যাণ আনয়নের মাধ্যমে সামাজিক সহমর্মিতা ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়। ফলে আর্থিক ও সামজিক বৈষম্যপূর্ণ একটি দুর্বল ও ভঙ্গুর সমাজ হয়ে উঠে সমান্তরাল ও শান্তিময়।
যে ব্যক্তি রোজা রাখে ও সঠিকভাবে জাকাত দেয় তার জন্যই কল্যাণের বার্তা রয়েছে। কারণ নিজেকে নিজের সাথে শপথ করার মাধ্যমে দেহ, মন ও চিন্তা চেতনার আসল শুদ্ধি শুধু রোজার মাধ্যমেই সম্ভব। অন্য কোন বাহ্যিক ইবাদতের সাথে রোজার এখানেই আসল পার্থক্য বিরাজমান। ঈমানদার মুসলমানগণ নামাজ আদায় করেন, রোজা রাখেন, জাকাত প্রদান করেন।
জাকাতের মাধ্যমে দুস্থ, অসহায় মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, উদারতা ও সহানুভূতির মহিমা প্রকাশিত হয়। সাধারণত প্রতিবছর রমজান মাসে মুমিনদের জমাকৃত বার্ষিক সম্পদের উপর ধর্মীয়মতে নির্দিষ্ট হার হিসাব করে জাকাত প্রদানের তৎপরতা বিষেশভাবে লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠে। কিন্তু বর্তমানে ভোগবাদী জীবনে অভ্যস্ত মানুষ ক’জন অপরের কথা ভাবেন?