মুসলিম উম্মাহ দীর্ঘ একমাস রোজা রাখার পর ঈদের দিন ধনী-গরীব সবাই যেন সমানভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে, এ জন্য মহান আল্লাহ সদকাতুল ফিতরের বিধান প্রদান করেছেন। দীর্ঘ এক মাস পর রোজা ভাঙা উপলক্ষে গরিব-মিসকিনকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যে দান করা হয়, তাই সদকাতুল ফিতর। যা আমাদের দেশে ‘ফিতরা’ নামে পরিচিত। ফিতরা আদায়ের উদ্দেশ্য দু’টি। ১. রোজার কাফফারা অর্থাৎ রোজায় আমাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় অনেক ভুল-ক্রটি হয়, সদকাতুল ফিতর আদায়ের দ্বারা তার ক্ষতিপূরণ হয়। ২. ঈদের দিন গরিব ও অসহায় লোকদের সহযোগিতা করা।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস আবদুল্লাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য সদকাতুল ফিতর আব্যশক করেছেন। অনর্থক, অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য এবং গরিব ও অসহায় লোকদের সহযোগিতা করার জন্য।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৬০৯
অন্যত্র এসেছে, হজরত জাবের (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের রোজা সদকাতুল ফিতর আদায়ের পূর্ব পর্যন্ত আসমান-জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে।’ -আত তারগিব
সদকাতুল ফিতর একটি আর্থিক ইবাদত। জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য যেসব শর্ত আব্যশক, সদকাতুল ফিতরের ক্ষেত্রেও অনুরূপ শর্ত প্রযোজ্য। ঈদুল ফিতরের দিন সুবহে সাদিকের সঙ্গে সঙ্গে সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয়। তাই কেউ যদি সেদিন সুবহে সাদিকের আগে জন্ম হয় বা নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তাহলে তার ওপর সদকাতুল ফিতর ওয়াজিব। ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার আগে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। ঈদের নামাজের পর তা আদায় করলে সদকাতুল ফিতর আদায় হবে না, বরং সাধারণ দান হিসেবে গণ্য হবে।