গর্ভকালে মায়েদের সবসময় থাকতে হয় একটু আলাদা যত্নে, একটু বেশিই সাবধানে। গর্ভধারণের সময় থেকে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত সময়কালে মা ও শিশুর যত্নকে গর্ভকালীন যত্ন বলে। এই গর্ভকালীন যত্নের লক্ষ্য হলো মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং গর্ভজনিত কোনো জটিলতা দেখা দিলে তা প্রতিরোধ বা চিকিৎসা করা। এককথায় মায়ের স্বাস্থ্যের কোনো অবনতি না করে সমাজকে একটি সুস্থ শিশু উপহার দেয়াই গর্ভকালীন যত্নের মূল লক্ষ্য।
গর্ভবতী মায়ের গর্ভকালে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ প্রসব ও প্রসব-পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গর্ভবতীর স্বামীসহ পরিবারের অন্য সবার সমান দায়িত্ব। গর্ভধারণের পরপরই গর্ভবতী নরীর গর্ভকালীন যতেœর জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়া এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। প্রথম ভিজিটের পর একজন গর্ভবতীকে সাধারণত ২৮ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিমাসে একবার, ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত ১৫ দিনে একবার এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার গর্ভকালীন যতেœর জন্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। পাঁচ থেকে আট মাসের মধ্যে দুটি টিটি টিকা নিতে হয়। বেশি পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার ও প্রচুর পরিমাণ পানি পান করা উচিত এ সময়। গর্ভকালে ভারী কোনো কাজ করা উচিত নয়। এ সময় সবসময় হাসিখুশি থাকতে হবে এবং দিনে এক থেকে দুই ঘণ্টা বিশ্রাম ও রাতে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে। যেকোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা ক্লিনিকে সন্তান প্রসব করানো নিরাপদ। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী দ্বারা সন্তান প্রসব করাতে হবে। তবে গর্ভকালে কোনো ধরনের জটিলতা দেখা দিলে অতি দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে গর্ভবতী মাকে।