সহিংসতা, সংঘাত, নির্লিপ্ততা, বিচ্ছিন্নতা ও বিভাজনের এক ভয়াবহ সময়ে উপনীত হয়েছি আমরা। পরিস্থিতির ভয়াবহতা অনেকেই হয়তো অনুধাবন করতে পারছেন। বহুবিধ সংকট ও সমস্যার মধ্য দিয়ে দেশ চলছে। কোথায় কখন কী হবে, বলা মুশকিল। এক উন্মত্ত অবস্থা বিরাজ করছে। জেল, জুলুম, বিনা বিচারে হত্যা, গুম, ধর্ষণ, কথায় কথায় মারপিট সংঘর্ষকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে।
সর্বশেষ ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষ হলে গেল। সেখানে পিটিয়ে মারা হলো নাহিদ হাসান নামের এক পথচারীকে। নাহিদকে মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। গা শিউরে ওঠা ওই ভিত্তিতে দেখা গেল, আহত নাহিদকে লাঠি দিয়ে বারবার আঘাত করা হচ্ছে।
আমরা পারস্পরিক আস্থাহীন, সম্পর্কহীন নির্মম এক বিভাজিত খুনে সমাজ নির্মাণ করে ফেলেছি। ক্ষোভ, ক্রোধের বশবর্তী হয়ে নাহিদের মতো অচেনা, অজানা মানুষজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। কারণ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় বিভাজন দিন দিন প্রকট হচ্ছে। এই সমাজে সবাই পরস্পরকে শত্রু জ্ঞান করে। আমার পক্ষে না এলেই অন্যকে শত্রু পক্ষে ঠেলে দিচ্ছি। এই ঠেলাঠেলির সমাজে আমরা অন্যায়–অনিয়মের বিরুদ্ধে যূথবদ্ধ হতে পারছি না। দুটো উদাহরণ দিলে আমাদের সমাজের ভাঙনকে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। একটা হচ্ছে, সমাজে বিচার না চাওয়ার একটি প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে, আওয়ামী–সমর্থিত পরিবারের এক সন্তানের বিএনপি–সমর্থিত ছাত্রদলের রাজনীতি করে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। এই দুটি উদাহরণ রাষ্ট্র ও নাগরিকের সম্পর্ক এবং রাষ্ট্রের ভেতরে নাগরিকদের মধ্যকার আন্তসম্পর্ককে বুঝতে সাহায্য করবে।