বিশ্ববাজারে সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে কয়লার। দামও বেড়ে চলেছে লাগামহীনভাবে। এ অবস্থায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে দেশে বিদ্যমান কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিয়ে। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ মুহূর্তে স্থানীয় কয়লা নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার। স্থানীয় খনিগুলোর মজুদ কয়লার উত্তোলনযোগ্যতা নিয়ে চালানো হচ্ছে সমীক্ষা। ফলাফল ইতিবাচক হলে চাহিদা পূরণের জন্য দেশে উত্তোলিত কয়লার ওপর নির্ভরতা বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে এখন প্রতি টন কয়লার মূল্য ওঠানামা করছে ৩৩০ ডলারের আশপাশে। যেখানে গত বছরের জুনেও পণ্যটির টনপ্রতি মূল্য ছিল ৯৭ ডলার। গত মাসে তা উঠেছিল রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৬২ ডলারে। বর্তমানে সেখান থেকে কিছুটা কমলেও কয়লার মূল্য এখনো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বলে বাজার-বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন। বিশ্ববাজারের এমন পরিস্থিতি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। শিগগিরই পণ্যটির মূল্য পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনাও দেখতে পাচ্ছেন না বাজার-বিশ্লেষকরা। বরং তা আরো কয়েক বছর ঊর্ধ্বমুখী থাকার পূর্বাভাস রয়েছে।
এ অবস্থায় কয়লা নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার। জোর দেয়া হচ্ছে স্থানীয় উত্তোলন বাড়ানোর ওপর। বিষয়টি নিশ্চিত করে জ্বালানি বিভাগ-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারদর পর্যবেক্ষণ করছে জ্বালানি বিভাগ। একই সঙ্গে যেসব কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনক্ষম হচ্ছে সেগুলোর জন্য বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে। বিশেষ করে স্থানীয় কয়লা নিয়ে নতুন করে পর্যবেক্ষণ চলছে। এসব পর্যবেক্ষণে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেলেও দ্রুতই উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
জ্বালানিতে আমদানিনির্ভরতাই দেশের বিদ্যুৎ খাতকে সংকটে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের ভাষ্যমতে, দেশের ভূগর্ভে কয়লার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। যদিও বড়পুকুরিয়া বাদে অন্য খনিগুলো নিয়ে পর্যাপ্ত মাত্রায় তত্পরতা দেখা যায়নি। বিভিন্ন সময়ে কয়লা খনির জরিপ ও উন্নয়নকাজের পদক্ষেপ নেয়া হলেও তা খুব বেশি কাজে দেয়নি। বৃহদায়তনে কয়লা উত্তোলন না বাড়িয়ে বাড়ানো হয়েছে আমদানিনির্ভরতা।