ঢাকার মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের বাসিন্দা শায়লা বীথি ও হাউজিং সোসাইটি এলাকার বাসিন্দা কামরুন্নেছা। দুজনের বাসায়ই তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানির গ্যাসের সংযোগ রয়েছে। মাসে শায়লার ব্যয় গড়ে ৫০০ টাকার কম। আর কামরুন্নেছাকে প্রতি মাসে বিল দিতে হয় ৯৭৫ টাকা।
একই এলাকায় একই কোম্পানির গ্যাস বিলের এমন পার্থক্যের কারণ জানা গেল এই দুজনের কাছ থেকে। শায়লা বীথি বলেন, তাঁর বাসায় গ্যাসের প্রিপেইড মিটার আছে। চার সদস্যের পরিবারে এক হাজার টাকা রিচার্জ করলে দুই মাসের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করা যায়।
কামরুন্নেছার বাসায় প্রিপেইড মিটার নেই। তাঁরও চার সদস্যের পরিবার। বিল দিতে হয় সরকার নির্ধারিত হারে। তিনি জানান, মাঝেমধ্যে গ্যাস–সংকটে রান্না করা যায় না। তবু প্রতি মাসে তাঁকে ৯৭৫ টাকা বিল দিতে হয়। রান্নার জন্য মাঝেমধ্যে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) সিলিন্ডারও কিনতে হয়। এতে খরচ আরও বেড়ে যায়।
রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করে দেশের সবচেয়ে বড় বিতরণ কোম্পানি তিতাস। তাদের আবাসিক গ্রাহক ২৮ লাখ ৫৬ হাজারের বেশি। এর মধ্যে প্রিপেইড মিটার আছে মাত্র ৩ লাখ ২০ হাজারের। আর বাকিরা সবাই মাসে মাসে নির্ধারিত হারে বিল পরিশোধ করেন।
যাঁদের বাসায় প্রিপেইড মিটার নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে বিল নির্ধারণে গ্যাসের ব্যবহার ধরা হয় অনুমানের ভিত্তিতে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সর্বশেষ ২০১৯ সালে দাম বাড়ানোর সময় মিটারহীন গ্রাহকের ক্ষেত্রে দুই চুলায় গ্যাসের মাসিক গড় ব্যবহার ধরেছে ৭৭ ঘনমিটার। তিতাসের প্রিপেইড মিটারধারী গ্রাহকদের বিগত চার মাসের বিল বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাঁরা প্রতি মাসে গড়ে ৩৪ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করেছেন, যার দাম ৪২৮ টাকা।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, কিছুটা অসচেতন হলেও সাধারণ মিটারহীন গ্রাহকেরা মাসে গড়ে ৫০০ টাকার বেশি গ্যাস ব্যবহার করেন না। কিন্তু তাঁদের বিল দিতে হয় প্রায় দ্বিগুণ।