গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাসের উদ্যোগে ‘রাজশাহীতে দুজন আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যা ও বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচ পরিস্থিতি ও পানি ব্যবস্থাপনা’ নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। বাংলাদেশে নানা বিষয় নিয়ে সরকারি ও বিরোধী দলের রাজনীতিকেরা কথা বলেন। কিন্তু কৃষকের সমস্যা নিয়ে কথা বলার কেউ আছেন বলে মনে হয় না।
ওই দিনের সেমিনারে অন্যদের মধ্যে দুজন সাংসদ ছিলেন, যাঁরা আদিবাসী ও সংখ্যালঘু সংসদীয় ককাসের সদস্য। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি। রাজশাহী অঞ্চলের কয়েকজন আদিবাসী নেতা রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দুই সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যা সম্পর্কে যেসব তথ্য হাজির করলেন, তা ছিল বেদনাদায়ক ও মর্মস্পর্শী। আদিবাসী কৃষকদের বেশির ভাগই গরিব ও ঋণগ্রস্ত। অভিনাথ মারান্ডি নামের যে কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, তিনি তাঁর খেতের ধান কম দামে এক মহাজনের কাছে আগাম বিক্রি করেছেন। সেই জমিতে এখনো পানি নেই। ধানের শিষ বের হচ্ছে, এমন সময় তাঁর জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে আছে। একই অবস্থা মৃত আরেক কৃষক রবি মারান্ডির জমিতেও। এ জন্য অভিনাথ মারান্ডি ও তাঁর চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি এলাকার গভীর নলকূপের অপারেটর ও স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেনের কাছে বারবার ধরনা দেন। সাখাওয়াতের এক কথা, পানি দেওয়া যাবে না। অভিনাথ ও রবির আর্তি ছিল, ‘পানি না দিলে বিষ খেয়ে মরব।’ সাখাওয়াতের সাফ জবাব, ‘তোরা বিষ খেয়ে আয় তারপর পানি দেব।’ এরপর তাঁরা সত্যি সত্যি নিজের জমিতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন।