উৎপাদন না বাড়লে খাদ্যের দাম আরও বাড়বে

যুগান্তর মো. আবদুল লতিফ মন্ডল প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৩৪

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) চলতি বছর বাংলাদেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন, চাহিদা, আমদানি ও মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর চালের উপাদন ১ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টনে দাঁড়াতে পারে। এরপরও এ বছর ১ কোটি ৫ লাখ টন চাল, গম ও ভুট্টা আমদানি করতে হবে। এর মধ্যে চাল, গম ও ভুট্টার পরিমাণ হলো যথাক্রমে ৭ লাখ টন, ৭৫ লাখ টন এবং ২৩ লাখ টন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্যশস্য, বিশেষ করে গম আমদানি কঠিন হবে। দামও বেশি দিতে হতে পারে।


চলতি বছর বাংলাদেশের মানুষের জন্য মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টন চাল দরকার হবে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১ শতাংশ বেশি। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউএসডিএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি মোটা চালের গড় দাম ছিল ৩২ টাকার কিছু বেশি। সেই চালের দাম এ বছর হয়েছে ৪৭ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে মোটা চালের দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। আর প্রতি কেজি সরু চালের দাম ৬৬ থেকে ৭২ টাকা, যা মধ্যবিত্তের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করেছে।


অন্যদিকে আমাদের খাদ্যশস্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গমের উৎপাদন গত শতকের নব্বইয়ের দশকের শেষদিকের তুলনায় অনেক কমে গেছে এবং পণ্যটির চাহিদা মেটাতে আমাদের মূলত আমদানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির দাম এখন আকাশছোঁয়া। সব ধরনের খাদ্যশস্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধিতে নিম্নবিত্ত, গরিব ও অতি গরিবদের জীবন সংকটে, আর মধ্যবিত্ত দুর্দশায়। খাদ্যশস্যের দাম আরও বেড়ে গেলে তা এসব মানুষের জীবনে কী করুণ অবস্থা সৃষ্টি করবে এবং এ অবস্থা থেকে তাদের কীভাবে স্বস্তি দেওয়া যেতে পারে তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।


এটা ঠিক, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমাদের প্রধান খাদ্য চালের উৎপাদন তিনগুণের বেশি বেড়েছে। স্বাধীনতার সময়কালের কমবেশি এক কোটি টন চালের উৎপাদন বর্তমানে সাড়ে তিন কোটি টন ছাড়িয়ে গেছে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তুলনায় চাল উৎপাদনে নিম্ন প্রবৃদ্ধি হার, বীজ হিসাবে সংরক্ষণ, পশুখাদ্য হিসাবে ব্যবহার এবং কাটা-মাড়া থেকে শুরু করে খাবার হিসাবে পরিবেশন পর্যন্ত অপচয় প্রভৃতি কারণে উৎপাদিত চালে আমাদের চাহিদা মিটছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ও অন্যান্য রিপোর্টে দেখা যায়, ২০১১-১২ থেকে ২০১৫-১৬ সময়কালে চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি হার ছিল শূন্য দশমিক শূন্য থেকে ১ শতাংশের মধ্যে। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছর বাদ দিলে ২০১৬-১৭ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি হার নেতিবাচক থেকে ১ দশমিক ৩০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। চাল উৎপাদনের এ প্রবৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের (১ দশমিক ৩৭ শতাংশ) চেয়ে কম।


দ্বিতীয়ত, কাটা-মাড়া থেকে শুরু করে খাবার হিসাবে পরিবেশন পর্যন্ত পণ্যটির বিপুল পরিমাণে অপচয় হয়। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, দেশে পণ্যটির উৎপাদন পর্যায়েই নষ্ট হচ্ছে এক-পঞ্চমাংশ। ব্রির ‘ডাবলিং রাইস প্রডাক্টিভিটি ইন বাংলাদেশ : আ ওয়ে টু অ্যাচিভিং এসডিজি ২ অ্যান্ড মুভিং ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বণিক বার্তায় ৩ সেপ্টেম্বর (২০২১) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১-১৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে শুধু উৎপাদন পর্যায়েই ধানের গড় ফলন নষ্ট হয়েছে ২০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর ২০১৬-২০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে নষ্ট হয়েছে ১৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তাছাড়া দেশের ৫৫-৬০ হাজার হোটেল-রেস্তোরাঁয় নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ খাদ্য, যার মূল্য হবে কোটি কোটি টাকা। এসব কারণে আমাদের প্রায় প্রতিবছর বেশকিছু পরিমাণ চাল উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হচ্ছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us