ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ভুয়া অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তারের ১৯ দিন পর মুন্সিগঞ্জের একটি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন স্থানীয় বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল। কিন্তু মুক্তি মেলেনি শিক্ষকদের, বিশেষ করে যদি সেই শিক্ষক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হন।
হৃদয় মণ্ডল জেলে থাকা অবস্থায়ই নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনী পালকে হিজাব বিতর্কে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি বড়ুয়ার বেলায়ও একই প্রচেষ্টা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঠিক পোশাক পরে আসতে বলার পর কয়েকজন মেয়ে অভিযোগ তোলে, তাদের হিজাব খুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে। পরে তদন্তে দেখা গেল, এর কিছুই হয়নি।
এগুলো যে পরিকল্পিতভাবে একটি গোষ্ঠী করছে সে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এসবের প্রতিকার কোথায়, সে নিয়ে যে বড় পরিকল্পনা প্রয়োজন সেই ভাবনাও কোথাও নেই।
হৃদয় মণ্ডলের ঘটনা আর চট্টগ্রামের ঘটনা দুটিই অদ্ভুত। হৃদয় মণ্ডলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র ক্লাসরুমের শিক্ষকের কথা গোপনে রেকর্ড করে সেটা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়, শিক্ষককে জেলে যেতে হয়। আর চট্টগ্রামের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দেয় যে, ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেল, কিছুই হয়নি।
এই পড়ুয়ারা এক সময় বড় হবে, সমাজের নেতৃত্ব নিবে। কিন্তু ভাবলে অবাক হতে হয়, কোথায় চলেছে সমাজ! শুধুমাত্র মূল্যবোধের অবক্ষয় বলে আর পাশ কাটিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তিনটি ঘটনাই যদি দেখি তাহলে দেখতে পাই, সুযোগসন্ধানীরা ধর্মীয় অনুভূতির সস্তা অভিযোগ তুলে সমাজকে, বিশেষ করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে তাতিয়ে দিতে চাচ্ছে এবং সেখানে মুখ্য ভূমিকা রাখছে শিক্ষকদের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রসূত ইন্ধন। সাথে আছে, ম্যানেজিং কমিটির কোনো কোনো সদস্যের মদদ।