'ওরা আমাকে মেরে ফেলবে, বাঁচতে চাই'

সমকাল প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০২২, ১০:০৫

'লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে পুরো শরীরে কালো বানিয়ে দিয়েছে। কাতরাচ্ছি ব্যথায়। ওষুধও দিচ্ছে না। পেট ভরে খেতে দেয় না চার মাস। আমি বাঁচতে চাই। এখানে থাকলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। দয়া করে এই দেশ থেকে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।' অ্যাপসভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম ইমোতে এমন ভয়াবহ আর্তনাদ নিয়ে সমকালকে কষ্টের কথা জানান সৌদি আরব প্রবাসী গৃহকর্মী ৩৯ বছর বয়সী শিখা বেগম।


রাজধানীর উত্তরখানের চানপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকে শিখার পরিবার। তার স্বামী হযরত আলী; সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ঘরে সচ্ছলতা আনতে গত সেপ্টেম্বরে রাজধানীর বনানীর একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে যান শিখা। সেখানে যাওয়ার পর তিন মাস সবকিছু ছিল ঠিকঠাক। পেয়েছেন বেতন ও খাবার। এর পর থেকে বন্ধ বেতন। খাবারও দেওয়া হয় না ঠিকমতো। বেতন-খাবার চাইলেই তার ওপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতনের খÿ। তামান্না নামের এক নারীর সহায়তায় সৌদিতে যান শিখা। স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তার সঙ্গে যোগাযোগও করেন হযরত আলী। তবে তামান্নার পক্ষ থেকে মেলেনি সাড়া। হযরত আলীর সঙ্গে গত রোববার সন্ধ্যার পর কথা হয় সমকালের।


তিনি বলেন, 'স্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হন্যে হয়ে ঘুরছি বিভিন্ন জায়গায়। কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। স্ত্রী দেশে ফেরার জন্য প্রতিদিন ফোন করে কান্নাকাটি করছে।'


হযরত আলীর ইমো নম্বর থেকে শিখা বেগমের সঙ্গে রোববার কথা হয়। তিনি জানান, ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি সৌদিতে যান। বিমানবন্দর থেকে সে দেশের একটি অফিসে নেওয়া হয় তাকে। এক দিন পরই তাকে আতর আলি নামের একজনের বাসায় কাজ দেওয়া হয়। কথা ছিল, মাসে দেওয়া হবে ২২ হাজার টাকা বেতন। পরে দেওয়া হয় ১৬ হাজার টাকা। পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়নি। বেতন থেকে মাসে ইন্টারনেট খরচ চলে যায় তিন হাজার টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত ঠিকমতো বেতন পেয়েছেন তিনি। এর পর থেকে বেতন বন্ধ। রমজানে সেহরিতে একটি রুটি এবং ইফতারের সময় দুটি রুটি পান তিনি। রমজানের আগে সকালে দুটি পাতলা রুটি, দুপুরে অল্প একটু ভাত দেওয়া হতো; যা খেয়ে ক্ষুধা মিটত না তার। বাড়ির মালিকের কাছে বেতন ও পেট ভরে খাবার দাবি করায় গত ২৯ মার্চ তাকে ওই বাসা থেকে প্রাইভেটকারে তিন ঘণ্টার পথ দূরত্বে একটি অফিসে নিয়ে যান আতর আলি। সেখানে একটি কক্ষে আটকে মেঝেতে ফেলে লোহার পাইপ দিয়ে শিখাকে পেটানো হয়।


তিনি জানান, তার হাঁটু, দুই হাতের আঙুল, হাতের কনুইসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পাইপের আঘাতের কারণে কালচে দাগ হয়ে গেছে। প্রচণ্ড ব্যথায় ঠিকমতো হাঁটতে পারছেন না, হাত নড়াচড়া করতেও কষ্ট হচ্ছে। এই শরীর নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে তাকে। শিখা বলেন, 'আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলে গেছে। কষ্ট হচ্ছে খুব। অনেকবার বাড়ির মালিককে বলেছি, ওষুধ কিনে দিতে। একটা ওষুধও দেয়নি। কত দিন পেট ভরে খাইনি।' দেশে ফেরার আকুতি জানান এই নারী।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us