স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও আমাদের মুক্তিযুদ্ধ

আজকের পত্রিকা ড. মিল্টন বিশ্বাস প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২২, ২১:৩২

১০ এপ্রিল ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ (প্রোক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্টস) দিবস। আজ থেকে ৫১ বছর আগে এই দিনে ঢাকা শহর থেকে দূরে নিভৃত এক গ্রামের আম্রকাননে উদ্ভাসিত হয়েছিল এর অবিনাশী বাক্যগুলো। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নৃশংস পৈশাচিকতায় বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর সে রাতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পৃথিবীর বুকে যুদ্ধরত বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে। অন্যদিকে মাত্র ১৫ দিনের মাথায় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেয় এই সরকার। এই সরকারের নেতৃত্বেই ৯ মাসের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।


একাধিক গবেষণাগ্রন্থ ও পত্রিকান্তরে প্রকাশিত সূত্রমতে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানিদের হাতে গ্রেপ্তারের আগেই বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর সেই নির্দেশনা অনুযায়ীই প্রথমে তাজউদ্দীন আহমদ পাকিস্তানিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য ৩০ মার্চ ফরিদপুর-কুষ্টিয়ার পথে পশ্চিম বাংলার সীমান্তে পৌঁছান। সেখান থেকে মেহেরপুর মহকুমার প্রশাসক তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীর সহায়তায় ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলামকে নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতে প্রবেশের মুহূর্ত থেকে ৩ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে বসা পর্যন্ত পুরো সময়টাই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভোটে নির্বাচিত এবং স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছিল। কারণ তাজউদ্দীন সেটা আদায় করে নিতে পেরেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে শুরু থেকেই দৃঢ় অবস্থানের মাধ্যমে।


৩ এপ্রিল ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে তাজউদ্দীন উপলব্ধি করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যেতে হলে একটি প্রশাসনিক কাঠামো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রপতি এবং নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন প্রতিনিধি হিসেবেই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য আলোচনা করেন। তাজউদ্দীনের সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধীর এই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছিল। আন্তর্জাতিক নানা হিসাব-নিকাশের কারণে তাৎক্ষণিক স্বীকৃতি না দিলেও ভারত বাংলাদেশের এই নতুন সরকারকে মুক্তিফৌজের আশ্রয়-ট্রেনিং-অস্ত্র থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেয়। প্রাণভয়ে দেশত্যাগ করে আসা শরণার্থীদের জন্য আশ্রয় এবং সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।


ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে এই বৈঠকের সূত্র ধরেই তাজউদ্দীন আহমদ আওয়ামী লীগের এমএনএ ও এমপিএদের কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তে অধিবেশন আহ্বান করেন। ওই অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে মুক্তিযুদ্ধ ও সরকার পরিচালনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হয়। এই মন্ত্রিপরিষদ এবং এমএনএ ও এমপিএরা ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করেন। তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাঁকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয়। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য নিয়োগ করা হয়। ১১ এপ্রিল এম এ জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us