শুরু যেভাবে
প্রতিটি মুদির দোকানেই থাকে বড়সড় একটি খাতা। প্রতিটি পাতায় ভরা থাকে সারা দিনের বিক্রির হিসাব, সারা মাসের বেচাকেনার তালিকা। খাতার কিছু পাতায় জায়গা করে নেয় বাকির হিসাব, কোন ক্রেতার কাছে পাওনা কত! ডিজিটালভাবে সেই হিসাব-নিকাশ রাখার জন্যই আসলে দেশি প্রতিষ্ঠান প্রগতি সিস্টেমস লিমিটেডের তৈরি করা ‘টালিখাতা’র শুরু। আর অ্যাপটির শুরুর কথা জানালেন টালিখাতার প্রধান নির্বাহী শাহাদাত খান, ‘আমার বন্ধু তুহিন ৩০ বছর ধরে খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে রফিকের মুদি দোকানে বাসার বাজার করে আসছেন।
তাঁর হাতে তিন সপ্তাহের বাকির রসিদ দেখে হয়ে পড়ি হতবাক। দোকানদারের সপ্তাহের ব্যালান্স বা জের তুলতে ভুল হয়েছে, যে কারণে তাঁর সেখানেই ক্ষতি হচ্ছে ৭০০ টাকা। বাকি বিক্রি করাই একটা বাড়তি চিন্তার বিষয়। এরপর যদি হিসাব লিখতে ভুলে যায়, সেটা তো বিশাল এক ক্ষতি। স্মার্টফোনের ডিজিটাল যুগে এটা মেনে নেওয়া যায় না। ঠিক তখনই মাথায় আসে, দোকানদারদের জন্য একটা অ্যাপ বানাতে হবে। ’
আর এভাবেই টালিখাতার যাত্রা শুরু হয় ২০২০ সালের জুনে। যাত্রার শুরুতে ধারণাও করা যায়নি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এর মধ্যেই আসলে কতটা ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠেছেন। ফলে মাত্র দুই বছরের কম সময়ে অ্যাপটির ইউনিক ডাউনলোড এসে দাঁড়ায় ৫০ লাখে। দেশের এক কোটির বেশি ছোট ব্যবসায়ীর হিসাব রাখার জন্য সহজ এক অ্যাপ। আর যাতে দোকানদারকে জেরে ভুল করার জের টানতে না হয়।
কী আছে টালিখাতায়
গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনা মূল্যে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে, ইনস্টলের পরপরই শুরু করা যাবে ব্যবহার। কিনতে হবে না কোনো সেবা। অ্যাপটির পুরো ইন্টারফেসই করা হয়েছে বাংলায়, ইংরেজি জানার প্রয়োজন একেবারেই নেই। ছোট ব্যবসায়ীদের, বিশেষ করে পাড়ার ছোট দোকানদারদের সব ধরনের হিসাব রাখার জন্য সহজ অ্যাপ এটি। এর মাধ্যমে একজন ব্যবসায়ী নগদে বিক্রি, বাকি বেচাকেনা, নগদ বা বাকিতে কম্পানি থেকে মাল কেনা, দোকানের খরচ ইত্যাদি লেনদেন রেকর্ড করতে পারেন। বাকিতে বিক্রির ক্ষেত্রে কাস্টমারের কাছে সঙ্গে সঙ্গে একটি এসএমএস চলে যায়। ব্যবসার আয়-ব্যয়ের চিত্র চোখের সামনে থাকে।