দুইটি পৃথক কিন্তু সম্পৃক্ত ঘটনা মাত্র একদিনের ব্যবধানে ঘটায় বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। দুইটি ঘটনাই ঘটিয়েছে দুজন পুলিশ সদস্য। প্রশ্ন উঠেছে এদের কারা উস্কানি দিচ্ছে। ত্বরিত এবং ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য যথাক্রমে ঢাকা মহানগর পুলিশ, সিলেট পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের লিখা শুরু করছি।
প্রথমটি ড. লতা সমাদ্দার নামীয় তেজগাঁ কলেজের এক অধ্যাপিকার কপালে টিপ দেওয়ায় নাজমুল তারেক নামের এক ধর্মান্ধ পুলিশ কনস্টেবলের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশকে চিহ্নিত এবং আটক করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ, বিশেষ করে তেজগাঁও অঞ্চলের পুলিশ যে নিষ্ঠা এবং দক্ষতা দেখিয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ভুক্তভোগী নারী, যাকে গালাগালি করেই সে কনস্টেবল ক্ষান্ত হয়নি, তার পায়ের উপর মোটর বাইক তুলে তাকে আহতও করেছে, সে কনস্টেবলকে চিহ্নিত করা সহজ ছিল না, কেননা ড. লতা সমাদ্দার সেই পুলিশ সদস্যের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেন নি। অভিযুক্তের মোটর বাইকের নম্বরও নির্ভুল ছিল না, শুধু তার মুখে বড় দাড়ি এবং গায়ে পুলিশের পোশাক এর বাইরে তিনি কিছু বলতে পারেননি। তদুপরি সেই পুলিশ তেজগাঁ এলাকায় কর্তব্যরত ছিল না, তার দায়িত্ব ছিল অন্যত্র। কৃতিত্ব ঢাকা পুলিশের। এ অবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায়, বেশ অল্প সময়ে অভিযুক্তকে চিহ্নিত এবং আটক উন্নত দেশের পুলিশ করতে পারতো কিনা সন্দেহ রয়েছে।
দ্বিতীয় ঘটনাটি সিলেট আদালতে কর্মরত জেলা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী নামের আরো এক পুলিশ পরিদর্শককে ঘিরে, যাকেও আপাতদৃষ্টিতে একজন ধর্মীয় মৌলবাদী-ই মনে করার কারণ রয়েছে। ঢাকার টিপ নিয়ে হেনস্তার বিরুদ্ধে যারা ফুসে উঠেছে, তাদের সমালোচনা করে একটি পোস্ট দেওয়ার পর পরই সিলেট পুলিশ প্রশাসন, নিশ্চয়ই কেন্দ্রীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেয়ে, এই লিয়াকতকে ক্লোজ করেছে। ঢাকার ঘটনার পর যেখানে গোটা দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, তার পর সিলেট পুলিশের সেই লিয়াকত কিভাবে তার নিন্দনীয় এবং অপরাধমূলক মন্তব্য পোস্ট করলো সেটিই সকল অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারা এই ধর্মান্ধ অপশক্তিকে সাহস এবং সহায়তা দিচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা এবং এ ব্যাপারে উপযুক্ত কর্মপন্থা গ্রহণ অপরিহার্য।