নারীর ক্ষমতায়নে করোনা-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ

সমকাল মৌলি আজাদ প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৩৭

দেশে পুরুষ-নারীর সংখ্যার অনুপাত প্রায় সমান। ইতোমধ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের নারীরা আজ সর্বস্তরে কাজ করছেন। দেশে শীর্ষ অবস্থানে যেমন উচ্চশিক্ষিত নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, তেমনি যে খাতগুলো আমাদের তেমন নজরে আসে না; যেমন- বিভিন্ন কলকারখানা-অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান সেখানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী কাজ করছেন। পোশাক খাতে নারীর অবদান হাজার পাতা লিখেও হয়তো শেষ করা যাবে না। কৃষি খাতেও নিয়োজিত আছে নারীদের বড় একটি অংশ। নারী আজ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ছে না, তারা পরীক্ষার ফলেও মেধার স্বাক্ষর রাখছে। নারী-পুরুষ সমান তালে কাজ করছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীকে ঘরে বসিয়ে রাখলে কখনোই আমরা এগোতে পারতাম না।


অবশ্য নারীর এ অগ্রগতি কিন্তু একদিনে হয়নি। বহু পথ পাড়ি দিয়ে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সুচিন্তিত পরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের দেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। তবে কি নারীর বিভিন্ন খাতে অংশগ্রহণই নির্দেশ করে নারীর ক্ষমতায়ন? খালি চোখে তা কি দেখা যায়?


নারী যখন ঘর থেকে বের হয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে, সে অবস্থায় বিশ্বব্যাপী ২০২০ সাল থেকে দেখা দিয়েছে কভিড-১৯ মহামারি। অর্থনৈতিক-সামাজিক খাতে মহামারির কঠিন থাবা যখন পড়েছে, তখন নারীও এর বাইরে যেতে পারে না। যেহেতু নারীর মহামারি সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না, সেহেতু সে ভয়ে প্রথমদিকে ঘর থেকেই বের হয়নি। এমন নয়, সব নারী তার নিজের ইচ্ছায় ঘর থেকে বের হয়নি, তাকে চারপাশ বাধ্য করেছে- নারী তুমি বের হয়ো না। যেহেতু সে বের হতে পারেনি, স্বভাবতই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারী, যারা টিউশন করছে, যারা বেবি সিটিং করছে, যারা পার্লারের কাজ করছে, তাদের অধিকাংশই চাকরি খুইয়েছে।


মহামারির প্রথমদিকে বহু মাস বিভিন্ন বাসায় যারা শ্রম দিয়ে উপার্জন করত, তারাও কাজ হারিয়েছে। অনেকে তাদের আগের কাজের পারিশ্রমিকও পায়নি। অর্থাৎ অনেক নারী কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেখা গেছে, অপ্রাতিষ্ঠানিক নানা খাতে পুরুষের তুলনায় নারীর কাজ হারানোর হার বেশি। কাজ হারানোয় নারীর হাতে যেহেতু এ মুহূর্তে অর্থ নেই, স্বভাবতই বোঝা যায় নারী নিজে থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। সে তার নিজের চিকিৎসা করাতে পারছে না। মহামারির এ সময়ে দেখা গেছে, নারী পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নিজের মতামত দিতে পারছে না, তাই তাকে অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ করতে হয়েছে বা হচ্ছে। ঘরে কাজ হারানো পুরুষটি দ্বারা নারী হচ্ছে নানাভাবে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার।


অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, করোনার এ সময়ে নারী তার জমানো টাকা খরচ করতে বাধ্য হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য নারীর পক্ষে সম্ভব হয়নি অনেক সময় সাবান বা মাস্ক কেনা। স্বভাবতই স্বাস্থ্যবিধি সে মেনে চলতে পারেনি। পুরুষ বাইরে গিয়ে কিছু খেতে পারলেও নারী ঘরে যা আছে তাই খেতে বাধ্য হচ্ছে। মহামারির এ সময়ে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। অনলাইন শিক্ষা নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা খুব একটা নিতে পারেনি- বলাই যায়, তারা অনেকেই চলে গেছে পড়াশোনার বাইরে। এ সময়ে অনেক শহুরে নারী হয়েছে সাইবার হয়রানির শিকার।


মহামারির কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বন্ধ থাকায় যেসব নারী অনার্স বা মার্স্টাস পাস করেছে, তারা কিন্তু বেশিরভাগই বেকার জীবনযাপন করছে। নারী এ জন্য পদে পদে হচ্ছে হীনমন্যতার শিকার, অর্থাৎ মহামারির এ সময়টা একজন নারীকে নরমাল অবস্থায় যতটা বাধাবিঘ্ন পার হতে হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি প্রতিকূলতা মেনে চলতে হয়েছে বা হচ্ছে। কিন্তু নারী যেহেতু অনেক বেশি ধৈর্য-সহ্য-বিচক্ষণতার অধিকারী, তাই সে শুয়ে-বসে সময় পার করেনি। সে ঘরে বসেই কাজ করেছে- বিভিন্ন রকম রান্নার, কাপড়ের বা অন্যান্য পণ্যের। সে ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করে উপার্জন করেছে অর্থাৎ সে হয়েছে উদ্যোক্তা নারী, প্রথাগত চাকরির জন্য চুপচাপ কেঁদে মরেনি।


যেহেতু নারী উদ্যোক্তা হয়েছে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় কাজ করছে, তাই নারীকে এখন টেকনোলজি সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। কাজের সুবাদে নারীর নানাজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। তার পণ্যের ব্যাপক প্রচার করতে হবে। প্রয়োজনে নারীকে হতে হবে বিদেশি ভাষায় দক্ষ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us