জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় দেশ নিয়ে গর্ব আর ভালোবাসা নিশ্চয়ই সবসময়ই থাকে। তবে এ দিন আবেগটাই বুঝি বেশি পেয়ে বসল রস টেইলরকে। দেশের জার্সি গায়ে শেষবার বলে কথা! ক্যামেরার চোখ খুব কাছ থেকে ফুটিয়ে তুলল তাকে। তখন তার চোখের কোণে চিকচিক করছে জল। সতীর্থদের সঙ্গে তখন তার সঙ্গী তিন সন্তানও। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হতেই এক হাতে মুছলেন চোখের পানি। তার পিঠ চাপড়ে দিলেন পাশে দাঁড়ানো মার্টিন গাপটিল। টেইলর সন্তানদের গালে এঁকে দিলেন ভালোবাসার চিহ্ন। এরপর মাঠ ছাড়লেন দর্শকের তুমুল করতালিতে।
রস টেইলরের শেষের শুরুটা হলো এমনই আবেগময়। এরপর ব্যাটিংয়ে নামার পালা। সেটির জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা। গাপটিল ও উইল ইয়াং দ্বিতীয় উইকেটে গড়লেন দুই শতাধিক রানের জুটি। প্রায় ৩৪ ওভারের সেই জুটিতে প্যাড পরে অপেক্ষা টেইলরের। অবশেষে গাপটিলের আউট তাকে সুযোগ করে দিল ৩৯তম ওভারে।
ব্যাট হাতে তিনি নামলেন, শেষবারের মতো। ড্রেসিং রুরে সতীর্থরা আর গোটা মাঠ তখন দাঁড়িয়ে তাকে অভিবাদন জানাচ্ছে করতালিতে। টিভি পর্দায় দেখা গেল গ্যালারিতে থাকা পরিবার-পরিজনদের। মাঠে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দিলেন প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডসের ক্রিকেটাররা।
মাঠে খুব দীর্ঘস্থায়ী হলো না তার উপস্থিতি। ট্রেডমার্ক সেই স্লগে একটি ছক্কা অবশ্য মারলেন মিড উইকেট দিয়ে। দলে রান বাড়ানোর তাড়ায় স্লগ করতে গিয়েই আউট হয়ে গেলেন ১৬ বলে ১৪ রান করে। সমাপ্তি হলো বর্ণাঢ্য এক অধ্যায়ের। ২০০৬ সালের মার্চে নেপিয়ারে শুরু হয়েছিল যে পথচলা, গৌরবময় নানা বাঁক পেরিয়ে তা সোমবার তা থেমে গেল হ্যামিল্টনে।
গত জানুয়ারিতে টেইলরকে ‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে সম্মানিত করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও। সেটি ছিল টেস্ট ক্রিকেটে তার শেষ ম্যাচ। এবার নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে চূড়ান্ত বিদায়। এ দিনের পর থেকে রস টেইলরের পরিচয়, ‘সাবেক ক্রিকেটার।’