শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরে সংকটের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানির একটা বড় অংশ হয়ে থাকে কলম্বো ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর ব্যবহার করে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেখা দিয়েছে তীব্র জ্বালানি সংকট। কলম্বো বন্দরে কনটেইনার পরিবহণে ব্যবহৃত ভারী যানবাহন চলাচল কমে গেছে জ্বালানির অভাবে। এ কারণে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দরে দেখা দিয়েছে কনটেইনার ও জাহজ জট। সেই জটে পড়ে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্য পাঠাতে বাড়তি সময় লাগছে ৪-৫ দিন। একইভাবে রপ্তানিতেও লাগছে বেশি সময়। এ জট দিনদিন বাড়ার কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের নৌবাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানান, কলম্বো বন্দরের জট দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি সংকটের মুখে পড়বে। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে সময়মতো পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে না। আমদানি পণ্য আসতেও হবে বিলম্ব। সবকিছু মিলিয়ে পণ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে বিপর্যয়ের আশঙ্কাও রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমদানি-রপ্তানিকারকদের অনেকে চট্টগ্রাম-কলম্বোর বিকল্প রুট খুঁজছেন। এক্ষেত্রে তারা ভারতের বন্দর হয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্য আনা-নেওয়া করা যায় কি না চিন্তাভাবনা করছেন।
নৌবাণিজ্যসংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ এবং রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশ হয়ে থাকে কলম্বো বন্দর ব্যবহার করে। চট্টগ্রাম বন্দরে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের বড় কনটেইনার জাহাজ ভিড়তে পারে না। এখান থেকে ফিডার (মাঝারি আকারের) জাহাজে করে কলম্বো, সিঙ্গাপুর, পোর্ট কেলাং ও তানজুম-পেলিপাস বন্দরে কনটেইনার নেওয়ার পর সেখানে অবস্থানরত মাদার ভেসেলে (বড় আকারের জাহাজ) বোঝাই করে ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোয় পাঠানো হয়। আমদানিও হয় একইভাবে। সিঙ্গাপুর বন্দরের চেয়ে কলম্বো হয়ে পণ্য পরিবহণে সময় তিন-চার দিন কম লাগে। তাই এ রুটটিতে আমদানি-রপ্তানকারক ও শিপিং এজেন্টদের আগ্রহ বেশি। চট্টগ্রাম থেকে রপ্তানি পণ্য কলম্বোয় পৌঁছাতে এবং খালাসের পর পুনরায় সেখানকার মাদার ভেসেলে লোড করতে সাধারণত ৮-৯ দিন সময় লাগে। কনটেইনার জট সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে এ কাজে আরও ৪-৫ দিন সময় বেশি লাগছে।