নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতার চূড়ান্ত রূপ প্রকাশ পেয়েছে। মাধ্যমিকের সঙ্গে সমন্বয় না করে এবং পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়নের আগেই প্রাথমিক স্তরের বিস্তারিত শিক্ষাক্রম অনুমোদন দিয়েছে প্রাথমিকের জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)। যেখানে মাধ্যমিক স্তরের শেখানোর প্রক্রিয়ার (শিখন) সঙ্গে প্রাথমিক স্তরে শেখানোর প্রক্রিয়ায় মিল নেই। প্রাথমিকে মূলত আগের (২০১২ সালের) শিক্ষাক্রমকেই পরিমার্জন করা হয়েছে।
মাধ্যমিকের নতুন শিক্ষাক্রমে যেখানে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে সার্বিকভাবে যোগ্য করে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে; সেখানে প্রাথমিকে অ্যাকটিভ লার্নিংয়ের (সক্রিয় শিখন) ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাকটিভ লার্নিং শিক্ষার্থীকে শিখনের ওপর আত্মনিয়ন্ত্রণ চর্চা করার সুযোগ করে দেয়, যা মূলত অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন ধারণার একটি মাত্র উপায়। আর অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনে অনেকগুলো ধাপ ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ অর্জন করে তা বাস্তবে প্রয়োগ করার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়।
প্রাথমিকের এমন সিদ্ধান্তের ফলে সমন্বিতভাবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেটি কার্যত ভেস্তে গেল।
নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাই বলছেন, প্রাথমিকের এমন সিদ্ধান্তে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য পূরণ হবে না। বরং উল্টো কিছু সমস্যার আশঙ্কা আছে। কারণ, শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক স্তরে একভাবে শিখে যখন মাধ্যমিকে পড়তে যাবে, তখন খাপ খাওয়াতে অসুবিধা হবে।