স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে নারীর ক্ষমতায়ন চিত্র

সমকাল বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২২, ০৯:৩২

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি নির্যাতিত, নিপীড়িত, শোষিত; পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাদের বাদ দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই তিনি নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান মহিলা আওয়ামী লীগ গঠন করেন। স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই ১৯৭২ সালে সংবিধানে নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করেন। আইন প্রণয়নের সর্বোচ্চ জাতীয় প্রতিষ্ঠান মহান জাতীয় সংসদে নারীদের পক্ষে কথা বলার জন্য নারী আসন সংরক্ষণ করেন।


মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে নারী পুনর্বাসন বোর্ড গঠন করেন। নির্যাতিত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের 'বীরাঙ্গনা' উপাধি দিয়ে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য ভারত, জাপান, জার্মানি, ব্রিটেন ও রাশিয়া থেকে ডাক্তার এনে চিকিৎসা করান। পরিবার তাদের গ্রহণ করতে চাইত না। নির্যাতিতদের বিয়ের ব্যবস্থা করে পরিবার ও সমাজে আলোকিত জীবন দান করেন। এসব কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বিয়েতে বাবার নাম জিজ্ঞেস করা হলে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বলে দাও বাবার নাম শেখ মুজিবুর রহমান, ঠিকানা ৩২ নম্বর ধানমন্ডি। নির্যাতিত নারীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্ত্রী ও কন্যাদের চাকরি, ভাতা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্যাতিত বীরাঙ্গনা নারীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৯৭৩ সালে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারীশিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, সমবায়, কৃষি, কুটিরশিল্পসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করেন।


বঙ্গবন্ধু চাইতেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েরা ছাত্র রাজনীতির চর্চা করুক। ১৯৭২ সালে ছাত্র রাজনীতির সংকটময় মুহূর্তে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের দু-একজন বাদে ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মী জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগে যোগদান করে। অনেক বাধা অতিক্রম করে কামাল ভাইয়ের (বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল) সহযোগিতায় আমি ছাত্রলীগ পুনর্গঠন করি। একদিন আমি বঙ্গবন্ধুকে বললাম, লিডার, আমি এখন আর ইডেন কলেজে নাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। রোকেয়া হলে থাকি। বঙ্গবন্ধু কয়েক সেকেন্ড নীরব থেকে বললেন, ইডেন কলেজে সংসদ নির্বাচন কবে? আমি বললাম, খুব শিগগিরই হবে। বঙ্গবন্ধু বললেন, তুমি যদি ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদে নির্বাচন করো, তাহলে ফুল প্যানেলে জয়লাভ করা সম্ভব। আমি তখন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি। পরদিন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ইডেন কলেজে অনার্সে (অর্থনীতিতে) ভর্তি হই। ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি এবং আমি জিএস নির্বাচিত হই। আমার নেতৃত্বে ইডেন কলেজে ছাত্রলীগ প্রথম ফুল প্যানেলে জয়লাভ করে। বঙ্গবন্ধুর স্নেহ, আদর্শ ও নির্দেশনায় ইডেন কলেজে সংসদ নির্বাচনে ছাত্র রাজনীতিতে আমার উত্থান এবং বর্তমান অবস্থান। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে জাতির পিতার অম্লান স্মৃতির প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।


জাতির পিতার পথ ধরে তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীর উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, ক্ষমতায়ন ও তার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। নারীর দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং উৎপাদিত পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে জয়িতা ফাউন্ডেশন গঠন করেছেন। সামাজিক ও আইনগত প্রেক্ষাপটে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে বিবেচনা করেই ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জয়িতা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করে তার নামফলক উন্মোচন করেন। পরে জয়িতাকেন্দ্রিক নারীমুক্তির স্বপ্নকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর 'জয়িতা অন্বেষণ বাংলাদেশ' নামে একটি অভিনব কার্যক্রমের সূচনা করে। ফলে জয়িতার পরিচিতি যেমন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, তেমনি জয়িতাকে কেন্দ্র করে দেশের নারী সমাজের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আশার সৃষ্টি হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us