সমঝোতা স্মারক সই (এমওইউ) হয়েছে তাও তিন মাস পার। তার পরও খোলেনি বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার। মালয়েশিয়া সরকারের 'আশীর্বাদপুষ্ট' বাংলাদেশের জনশক্তি ব্যবসায়ীদের একাংশ আগের মতোই সীমিত সংখ্যক রিক্রুটিং এজেন্সি বা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠাতে চায়। দুর্নীতির অভিযোগে এর আগে বাতিল হওয়া 'জিটুজি প্লাস' পদ্ধতিতে কর্মী পাঠাতে এখনও চাপ দিয়ে যাচ্ছে ওই সিন্ডিকেট। রাজি না হলে বাংলাদেশিদের বাদ দিয়ে অন্য দেশ থেকে কর্মী নেবে মালয়েশিয়া- এমন প্রচারও চালানো হচ্ছে জোরেশোরে।
সংশ্নিষ্ট সূত্রে জানা যায়, অনিয়মের অভিযোগে ২০০৯ সালে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে মালয়েশিয়া। তিন বছরের আলোচনায় ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর সরকারিভাবে (জিটুজি) কর্মী পাঠানোর চুক্তি হয়। পরে জিটুজি সফল না হওয়ায় অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হিসাবে, সেই তিন বছরে সাগরপথে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার মানুষকে দেশটিতে নেওয়া হয়। অবৈধ পথে বিদেশযাত্রার মাঝপথে প্রাণও হারান অনেকে। ২০১৪ সালে থাইল্যান্ডে গণকবর আবিস্কারের পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাড়া পড়ে।
২০১৫ সালে 'জিটুজি প্লাস' পদ্ধতিতে বাংলাদেশের মাত্র ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে পৌনে তিন লাখ কর্মী নেয় মালয়েশিয়া। প্রথমে এই পদ্ধতিতে ৩৭ হাজার টাকা এবং পরে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা অভিবাসন খরচ ধরা হলেও শেষ পর্যন্ত কর্মীপ্রতি নেওয়া হয় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা। এতে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ তুলে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় ফিরে মাহাথির সরকার জিটুজি প্লাস বাতিল করে।
জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আবারও সিন্ডিকেট হলে তিন থেকে চার গুণ টাকায় মালয়েশিয়ায় যেতে হবে কর্মীদের। আগের বার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ান নাগরিক দাতো নূর আমিন ও বাংলাদেশের রুহুল আমিন স্বপন। অভিযোগ রয়েছে, এবারও তারা সিন্ডিকেট করতে চাপ দিচ্ছেন। তবে এ অভিযোগ নাকচ করেছেন তারা।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, 'সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী পাঠাবে না বাংলাদেশ। এ কারণে যদি নেপাল বা অন্য দেশ থেকে কর্মী নিতে চায়, মালয়েশিয়া নিতে পারে।'