রুর দুধ বেচে চলে আবু তাহেরের সংসার। থাকেন টিনের একটি ছাপরায়। সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্য কেনার ফ্যামিলি কার্ড পাননি তিনি। একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারা চৌধুরী। বেসরকারি একটি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক তিনি। শহরে তাঁর বহুতল পাকা বাড়িও আছে। অসচ্ছল তাহের না পেলেও সচ্ছল এই নেত্রীর নামে টিসিবির কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ঠিকই। টিসিবির কার্ড পাওয়া না পাওয়া নিয়ে বিপরীত এই চিত্র ঠাকুরগাঁও পৌর এলাকার।
টিসিবি রংপুর কার্যালয়ের উপ-ঊর্ধ্বতন কার্যনির্বাহী প্রতাপ কুমার জানিয়েছেন, উপকারভোগী নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনসংখ্যা, দারিদ্র্যের সূচক বিবেচনায় রেখে তালিকা তৈরি করার কথা। কিন্তু ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় নীতিমালা ভেঙে চলমান এই কর্মসূচির তালিকায় আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের নামে কার্ড বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে।
নিজের নামে কার্ডের কথা শুনে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারা চৌধুরী বলেন, ‘আমি কারও কাছে কার্ড চাইনি। আর আমি তো কার্ড পাওয়ার যোগ্যদের মধ্যে পড়িও না। এরপরও আমার নামে কীভাবে এল, বলতে পারছি না।’
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সারা দেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়ে ৯২ হাজার ৬৮৮টি পরিবারের মধ্যে টিসিবির পণ্য কেনার কার্ড বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় দেওয়া হয়েছে ৭ হাজার কার্ড। টিসিবির ডিলাররা এই কার্ডধারীদের কাছে ‘প্যাকেজ’ হিসেবে তিনটি পণ্য (দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল) ৪৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
গত সোমবার ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় বড় মাঠে বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, টিসিবির পণ্যের জন্য নারী ও পুরুষদের পৃথক দুটি দীর্ঘ লাইন। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সবার হাতে হাতে কার্ড।