এই আইনটি পাশ হলে ধর্ষণ মামলায় আদালতে নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাকে হেনস্থা করার সুযোগ থাকবে না। ধর্ষণ মামলায় বিচার পাওয়া সহজ হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনের এই দুইটি ধারার সুবিধা নিয়ে আসামির আইনজীবীরা ধর্ষণের শিকার নারীকে এক অর্থে দ্বিতীয়বার আদালতে মৌখিকভাবে ধর্ষণের সুযোগ নেয়, যা একজন নারীর জন্য চরম অবমাননাকর। ট্রমার মধ্য দিয়ে যাওয়া নারীকে আরো গভীর ট্রমায় নিয়ে যায়। এই দুইটি আইন বাতিল হলে আদালতে নারীকে নতুন করে হেনস্থা হতে হবে না। ধর্ষণের মামলা প্রমাণও অনেক সহজ হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান জানান, ওই দুইটি ধারা হলো ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) এবং ১৪৬(৩) ধারা। এই দুইটি ধারায় ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। ১৫৫(৪) ধারায় নারীর সাক্ষ্য নেয়ার সময় সরসরি তার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। সেখানে ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র, তার অতীত যৌন জীবন, সম্পর্ক- সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন করা যায়।
এসব প্রশ্ন করে নারীকে শুধু মানসিকভাবে দুর্বলই নয়, তাকে খারাপ চরিত্রের বলে প্রমাণের চেষ্টা করে ধর্ষণ মামলার আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করার সুযোগ ওই আইনে দেয়া আছে। আর ১৪৬(৩) ধারায় জেরার সময়ও নারী ও পুরুষ উভয়কে চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। তবে আইনজীবীরা এটা নারীর ওপরই প্রয়োগ করেন। অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, " এই দুইটি ধারা ব্রিটিশ আমলের। এই আইন ধর্ষণ মামলার বিচারে বড় বাধা। কারণ, আইন দুইটির কারণে ঘটনা বাদ দিয়ে আদালতে আইনজীবীরা নারীর চরিত্র হননে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কারণ, দুশ্চরিত্রা প্রমান করতে পারলে আইনে আসামি সুবিধা পান। শুধু তাই নয়, ব্যক্তিগত প্রশ্ন করে নারীকে নতুন মামলার ফাঁসিয়ে দেয়ারও সুযোগ আছে।”
তার মতে, এই দুইটি ধারা বাতিল অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এর ফলে ধর্ষণের শিকার নারী বিচার দাবিতে আরো সাহসী হবেন। ওই আইনের কারণে কোনো কোনো নারী ধর্ষণের বিচার চাইতেই ভয় পান।