পুরোদমে ক্লাস শুরুর পর তীব্র যানজটে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। আধাঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লেগেছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। অসহনীয় যানজটে ছাত্রছাত্রী, অফিসগামী মানুষসহ জরুরি প্রয়োজনে ঘরে থেকে যারা বের হয়েছেন তারাই পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
বাসা থেকে পথে নেমেও বিমানবন্দর পৌঁছাতে না পারায় অনেকে ফ্লাইট মিস করেন। দীর্ঘপথ হেঁটে অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছেছেন। যানজট পরিস্থিতি দেখে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি বাদ দিয়েছেন কেউ কেউ। থেমে থেমে গাড়ি চলা সড়কে রোগীদের অবস্থাও ছিল নাকাল।
অধিকাংশ সড়কে যানবাহনগুলো দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে যানজটে আটকে ছিল অ্যাম্বুলেন্স। রোগী পরিবহণের এই যানের সাইরেনের শব্দও যেন কারও কানে যাচ্ছিল না।
উল্টো পাশ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলো যে যাবে সেই সুযোগও ছিল না কোথাও কোথাও। কারণ দুই পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল গাড়ি। মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে ছিল এমন চিত্র।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর রোববার থেকে প্রাক-প্রাথমিক ও মাধ্যমিকপর্যায়ের ক্লাস পুরোদমে শুরু হয়েছে। ফলে ভোর থেকেই সড়কে পরিবহণের চাপ বাড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে কর্মমুখী মানুষের ভিড়।
দেখা দেয় তীব্র জানযট। উত্তরা থেকে খিলক্ষেত, বনানী হয়ে যানজট ছড়িয়ে পড়ে কাওরান বাজার, মতিঝিল, বাবুবাজার, সদরঘাট, মালিবাগ, শান্তিনগর পর্যন্ত। উলটো দিকে জাহাঙ্গীর গেট থেকে বনানী পর্যন্ত গাড়ির চাপে রাস্তায় কোনো ফাঁকা জায়গা ছিল না।
এ ছাড়া কুড়িল বিশ্বরোড-রামপুরা রোডে যাতায়াতকারীদেরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কেই কেটে যায় কর্মব্যস্ত মানুষগুলোর। অনেকে উপায় না দেখে গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি এই ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তোলে। সড়ক খনন করায় যান চলাচলের জায়গাও কমে এসেছে। তিন লেনের চলাচলের রাস্তা এক লেনে নেমে এসেছে। অনেক জায়গায় চার লেনের সড়কে গাড়ি চলছিল এক লেনে। ফলে যানজট আরও বেড়েছে। ফুটপাত দখল ও খোঁড়াখুঁড়িতে হেঁটে গন্তব্য যাওয়াও ছিল চ্যালেঞ্জ।
এদিকে মহাখালী, সাতরাস্তা, বিজয় সরণি, বাংলামোটর, শাহবাগ, মতিঝিলসহ বিভিন্ন স্থানে অন্যান্য দিনের চেয়ে যানজট তীব্র ছিল। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই ট্রাফিক পুলিশদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায়।