অবৈধ লেনদেনের ঝুঁকি এড়াতে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে অন্যদের অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিচ্ছে প্রভাবশালী অপরাধীচক্র। উপহার দেওয়ার নামে বিদেশিদের প্রতারণা, ‘হ্যালো পার্টি’, অবৈধ পণ্য বিক্রি, অপহরণ ও মাদকসহ নানা অপরাধের লেনদেন এসব অ্যাকাউন্টের (ব্যাংক হিসাব) মাধ্যমে করা হয়, যার অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা হয়, তিনি পান ৫ শতাংশ। দেশে শত শত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এভাবে ভাড়ায় খাটানোর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে আমাদের সময়ের অনুসন্ধানে।
এসব ‘ভাড়াটে অ্যাকাউন্টে’ কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়। চক্রগুলো যে কৌশলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভাড়া করে অপরাধ করে, তেমনি একটি ঘটনার সূত্রপাত ঘটে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায়। সেখানে পাখি কেনাবেচা করেন কায়েস হোসেন নামে এক ব্যক্তি। হঠাৎ একদিন এক ‘ভিআইপি ক্রেতা’ একসঙ্গে তার অনেক পাখি কিনে নেন। ক্রেতার সঙ্গে কায়েসের সখ্য গড়ে ওঠে। পাখি কেনার টাকা নগদে পরিশোধ না করে তিনি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে চান; কিন্তু কায়েসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই জানার পর ক্রেতা নিজেই ছবি তুলে আর কাগজপত্রে সই নিয়ে অ্যাকাউন্ট করে দেন। কায়েসের নামে একটি মোবাইল সিমও কেনেন। এর পর অনেক চেকবইয়ে কায়েসের স্বাক্ষর নেন। তাকে দিয়ে কয়েকটি ব্যাংকের এটিএম কার্ডও তোলেন। এভাবে একে একে ১৮টি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা হয় কায়েসের নামে। কায়েসের নামের অ্যাকাউন্টে প্রতিদিনই জমা হতে থাকে টাকা। সেই টাকার ৫ শতাংশ ভাগ দেওয়া হয় কায়েসকে। এক পর্যায়ে কায়েস পরিচিতদের অ্যাকাউন্টও ভাড়া দেওয়ার লোভে পড়ে যান। এভাবে কায়েসের মতো অসংখ্য মানুষ জড়িয়ে পড়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভাড়া দেওয়ার অসাধুচক্রে।