করোনার ধাক্কায় টালমাটাল এমনিতেই দেশ, বিশ্ব। বৈশ্বিক এই মহামারিতে নাজেহাল সব শ্রেণিপেশার মানুষ। তবু মানুষ বাঁচতে শিখেছে। খেয়ে, না খেয়েই অনেকটা; ছোট পুঁজির ব্যবসায়ীরা বিপর্যস্ত, নিম্ন-আয়ের মানুষের কষ্ট কেবল নিজেদেরই। উচ্চবিত্তদের হেরফের হয়নি তেমন একটা। তবে মধ্যবিত্ত শ্রেণি শ্রেণিচ্যুত হয়েছে, নিম্নবিত্তরা নিঃস্ব প্রায়। মধ্যবিত্ত শ্রেণির বেশিরভাগই নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে নেমে গেছে। নিম্ন-মধ্যবিত্তরা নিম্নবিত্তে। এনিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণার কথা জানা যায়নি, তবে সাধারণের একজন হিসেবে অপরাপর সাধারণের সঙ্গে মিশলে এর প্রমাণ মেলে।
করোনা থাকাকালে এখন চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। এক লহমায় পুরো বিশ্বের চোখ নিবদ্ধ ওই দিকে। মুহূর্তেই হাওয়া করোনার আলোচনা। করোনাভাইরাসের চেয়েও মহামারি হয়ে দেখা দিয়েছে এই যুদ্ধ-ভাইরাস। তৃতীয় বিশ্ববাসী হলেও ওই যুদ্ধের প্রভাব দেখতে শুরু করেছি। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমরা ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থানে। কিন্তু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই কোন না কোন পক্ষে। চলছে নিষেধাজ্ঞা-নিষেধাজ্ঞা খেলা! বিশ্বায়িত বাণিজ্য ব্যবস্থায় এই নিষেধাজ্ঞা-খেলা থেকে আমরা মুক্ত হচ্ছি কই, কীভাবে? কোন না কোনভাবে এর প্রভাব পড়েছে, পড়ছে এবং এই সংঘাত দীর্ঘায়ত হলে এর প্রভাব পড়বে প্রকটভাবে।
যদিও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাৎক্ষণিক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়বে না।’ তবে তিনি এও বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থনীতিতে কী প্রভাব পড়বে তা, জানতে আমাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের যে বাজার আছে, পশ্চিমা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যেখানে আমাদের এক্সপোর্ট মার্কেট, কাপড়, মাছ মাংস, খাবার-দাবার এগুলো যাবেই। এগুলো আটকানোর কথা না। এই যুদ্ধে তাৎক্ষণিক কোনো প্রভাব দেখছি না। আরেক বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে কিছু ব্যবসা আছে, খুব বেশি না। তাদের সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তারা ঋণ দিয়েছে। এটি করোনাকালীন বন্ধ হয়নি, এখনো বন্ধ হবে না।’