গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হতে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ষোল দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য সৈন্য নিহত হচ্ছেন। নারী-পুরুষ ও শিশুসহ শত শত বেসামরিক লোকও নিহত ও আহত হচ্ছেন। ঘর-বাড়ি, অফিস-আদালত, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ধ্বংস হওয়া অব্যাহত আছে।
মানুষ প্রাণের ভয়ে ইউক্রেন ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধের ষোলতম দিবস পর্যন্ত পঁচিশ লক্ষাধিক ইউক্রেনিয়ান নাগরিক প্রতিবেশি দেশ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, মলডোভা, রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়ায় শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। শরণার্থীদের কাফেলা অব্যাহত আছে। যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে চরম মানবিক বিপর্যয় ঘটছে। আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা ব্যবস্থা সংকটাপন্ন অবস্থার মধ্যে পড়ছে। এ যুদ্ধের ভবিষ্যত কি হবে তা এ মুহূর্তে বলা সহজ নয়।
কেন এই যুদ্ধ?
ইউক্রেন রাশিয়ার পর ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। আয়তন ৬,০৩,৬২৮ বর্গ কিলোমিটার। লোকসংখ্যা ৪০.৪ মিলিয়ন। প্রাকৃতিক সম্পদ, কৃষি ও শিল্পজাত সম্পদ রয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মনে করেন ইউক্রেন আসলে প্রাচীন রুশ ভূখণ্ড। তাঁর মতে আধুনিক ইউক্রেন প্রকৃতপক্ষে বলশেভিক কমিউনিস্ট রাশিয়ার সৃষ্টি। রাশিয়াই ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদের উম্মেষ ঘটিয়েছে। ইউক্রেনের সংস্কৃতি রাশিয়ারই সংস্কৃতি। ইউক্রেনের অধিকাংশ মানুষ রাশিয়ান ভাষায় কথা বলে।
পুতিন মনে করেন ইউক্রেন কারো সাথে সখ্য বা জোট গড়তে চাইলে তা অবশ্যই রাশিয়ার সাথে হতে হবে। যেমনটা করেছে বেলারোস। পুতিনের কথায় যৌক্তিকতা থাকলেও ১৯৯১ সাল থেকে ইউক্রেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার আছে। স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন সকল সভ্য রাষ্ট্রেরই উচিত। জোর যার মুল্লুক তার এ নীতি আধুনিক বিশ্বের কোন রাষ্ট্রই সমর্থন করবে না।