হাজারের বেশি সফল কিডনি প্রতিস্থাপন করে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। দরিদ্র কিডনি রোগীদের কিডনি প্রতিস্থাপন ও মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেছেন সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস (সিকেডি) অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতাল।
কিডনি সংযোজন দুইভাবে করা যায়। একটি হলো নিকটাত্মীয়, যেমন মা-বাবা, ভাইবোন, চাচা-মামা, ফুফু-খালা; এমনকি চাচাতো ভাই, ফুফাতো ভাই, খালাতো ভাই, নানা-নানি, দাদা-দাদি, স্বামী-স্ত্রী। যাঁদের বয়স ১৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে এবং যাঁদের দুটি কিডনি সুস্থ, ডায়াবেটিস নেই, উচ্চ রক্তচাপ নেই, কিডনিতে কোনো অসুখ নেই, অন্যান্য রোগের কারণেও কিডনি আক্রান্ত নয়, তাঁরা স্বাভাবিক অবস্থায় স্বেচ্ছায় আত্মীয়কে কিডনি দিতে পারেন।
এ ছাড়া আরেকটি উপায় হলো মৃত ব্যক্তির দান করা কিডনি। শুধু দুটি কিডনি নয়, একটি মরদেহ থেকে লিভার, হৃৎপিণ্ড, দুটি ফুসফুসও অন্যকে দান করা যায়; অর্থাৎ একজন মৃত ব্যক্তি ৮-১০ জন মানুষকে পুনর্জীবন দিতে পারেন। তাঁদের বয়সও ৫ থেকে ৬৫ হতে হবে। দাতাদের ক্ষেত্রে দুটি কিডনি সুস্থ থাকতে হবে। বাড়িতে বা হাসপাতালের সাধারণ বিছানায় অথবা সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে রাস্তাতেই মারা গেলে সেই কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গ কিন্তু কাজে আসে না। যার অঙ্গ নেওয়া হবে, তাঁকে মৃত ঘোষণা করতে হবে আইসিইউতে বা নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে। যখন আইসিইউতে থাকা ব্রেন ডেড রোগীদের মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটে, কিন্তু অন্যান্য অঙ্গ তখনো কৃত্রিম উপায়ে কার্যকর থাকে, তখন অনুমতি পেলে আইন অনুযায়ী সেই ব্যক্তির অঙ্গ নিয়ে অন্যের দেহে প্রতিস্থাপন করা যায়। যদিও আমরা এ ক্ষেত্রে তেমন উন্নতি করতে পারিনি। উন্নত বিশ্বে ৮০-৯০ শতাংশ কিডনি এভাবেই প্রতিস্থাপন করা হয়। এই জন্য আমাদের ডোনার সংকট এত বেশি।
আরেকটি উপায় হলো অঙ্গ বিনিময় বা অর্গান সোয়াপিং পদ্ধতি। একটি পরিবারের কারও কিডনি দরকার কিন্তু তার পরিবারের যিনি দিতে আগ্রহী, তাঁরটা ম্যাচ হচ্ছে না। আবার আরেক রোগীর পরিবারের কারও কিডনি দরকার, যাঁর সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। তখন এই দুই রোগীর পরিবার ফেয়ার ডোনেশনের ভিত্তিতে কিডনি আদান-প্রদান করতে পারে। বিষয়টি যদি আইনে অন্তর্ভুক্তির জন্য কাজ করা যায়, তাহলে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরিসর আরও বাড়বে।