এই মহাজাগতিক প্রেমের যুগে ‘গাছের পাতা নড়েচড়ে/ তোমার কথা মনে পড়ে’– জাতীয় ছড়া নিতান্তই প্রাচীনকালের কথা। কিন্তু এটাও তো ঠিক, ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’ কবিতা দিয়ে যেমন রবীন্দ্রনাথের কবিতা লেখার হাতেখড়ি, তেমনি এই গাছের পাতার নড়াচড়া আর তার কথা মনে পড়ার যে ছড়া, সেটা দিয়েই আমাদের প্রেমের পদ্য শোনা ও লেখার হাতেখড়ি। আজ এই প্রেমের দিনে উপহার পাওয়া ফুল আর চকলেট ছুঁয়ে বলুন তো, বাঙালি অস্বীকার করতে পারবে? আমি জানি, এবার আপনি বেশ খানিকটা চাপে পড়ে গেছেন।
প্রেম বিষয়ে বাঙালি চিরকাল ‘সাই ফিল’ করেছে। মানে লজ্জায় লাল হয়ে গেছে, তা সে নারী বা পুরুষ যে-ই হোক না কেন। সে জন্যই প্রবাদ রটেছে, ‘নারীর বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না।’ আহা, যেন পুরুষ সব সময়ই বীরদর্পে গিয়ে বলেছে, ‘ওগো হৃৎপিণ্ডেশ্বরী, লহ মোর নিবেদন।’ সুইটহার্ট বলার যুগে হৃৎপিণ্ডেশ্বরী বলাটা ঠিক না জমলেও, সুইটহার্টের বাংলা হিসেবে কখনোই কিন্তু ‘আমার মিষ্টি হৃৎপিণ্ড’ বলা হয়নি। তাই ‘হৃৎপিণ্ডেশ্বরী’ শুনে যতই বায়োলজি ক্লাসের কথা মনে পড়ুক না কেন, ওটা ঠিকই আছে রক্ত-মাংসের বাঙালির কাছে।