অভাবে নয়, স্বভাবে গরিব

সমকাল মো. রবিউল ইসলাম প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:৫৫

গত নভেম্বরে জাতীয় দৈনিকগুলোতে খবর এসেছে, চাহিদামতো বখশিশ না পেয়ে ১৫ বছরের এক কিশোরের অক্সিজেন মাস্ক খুলে দেয় বগুড়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক অস্থায়ী কর্মচারী। এ ঘটনায় নির্দয়তা, অমানবিকতার চিত্র ফুটে উঠলেও এর সঙ্গে আছে নিম্নশ্রেণির কিছু সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীর বহুদিনের কাজ করে বা না করে হাত পাতার অভ্যাস। তাদের চেয়েও অনেকে অর্থনৈতিকভাবে গরিব আছে, কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তি তাদের মধ্যে নেই। যেমন- রিকশাওয়ালা, সবজিওয়ালা, চায়ের দোকানদার। হাত পাতার সঙ্গে যে অর্থনৈতিক অবস্থার সম্পর্ক নেই, তার আরেকটা প্রমাণ ঘুষবাণিজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সল্ফ্ভ্রান্ত চাকরি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই শুরু করেন ঘুষের কারবার। এতে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়, আর দেশের মানুষ বঞ্চিত হন নাগরিক সেবা থেকে। সরকার বেতন বাড়িয়ে ও বিভিন্নভাবে অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়েও তাদের বশে আনতে পারেনি। এমন ঘুষজীবীদের মধ্যে অনেকে আবার একটু চক্ষুলজ্জা রাখেন। তাই তাদের ঘুষের কারবারটা সরাসরি নিজে না করে পিয়ন, ড্রাইভারদের মাধ্যমে সারেন। তাই সরকারি অফিসের অনেক পিয়ন, ড্রাইভার আজ কোটি কোটি টাকার মালিক।


এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের দায়মুক্তির একটা সম্পর্ক থাকে। কেউ দিনের পর দিন যখন দুর্নীতি করেন, আর বিশ্বাস করতে শুরু করেন- কেউ তার কিছু করতে পারবে না, তখন চক্ষুলজ্জাটুকুও কেটে যায়। তাই তো বালিশের দাম হয় ৪০ হাজার টাকা আর পর্দার দাম হয় ৩৭ লাখ টাকা! বিদ্যাবুদ্ধি থেকে কী লাভ, যদি বিবেক না থাকে? ইঞ্জিনিয়ার সরকারি আমলা হয়ে বা প্রকল্পপ্রধান থেকে বছর না ঘুরতেই প্রকল্পের বাজেট বাড়াতে থাকেন দ্বিধাহীন চিত্তে। হয়ে যায় পুকুরচুরির পরিবর্তে সাগরচুরি। তাদের খামখেয়ালিতেই অসাধু ঠিকাদাররা রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করার সাহস পায়। আর এক দল আবার চাকরিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ করে চলে। যেন রিটায়ারমেন্টের পরও অন্য কোনো লাভজনক পদে আসীন হওয়া যায়। শুধু চাই আর চাই! চাওয়ার যেন শেষ নেই! তারা অভাবে নয়, স্বভাবে গরিব। তাদের তুষ্ট করা যায় না কিছুতেই।


দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও এমন চর্চা বিদ্যমান। কোনো কোনো ধনী রাজনীতিকও নির্বাচনের সময় নিজেকে সাধারণ মৎস্যজীবী দাবি করে তার হলফনামায় মাত্র কয়েক লাখ টাকার সম্পদ দেখান। শতকোটি টাকার মালিক হওয়ার পরও একগাল হাসি দিয়ে কেউ কেউ নিজেকে শ্রমিক নেতা দাবি করেন। কেউ কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় নিজে পোস্টার বানিয়ে তার নিচে লিখে দেন- প্রচারে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ। এমন সব লোকও রাজনীতির পরশপাথর পেয়ে লজ্জা-ঘৃণার মাথা খেয়ে হয়ে গেছেন সম্পদের কৈলাস পর্বত। অনেকে রাষ্ট্রীয় পদে বসে অক্ষম আর ব্যর্থ হয়েও দিনের পর দিন চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখেন। হাজার সমালোচনা আর নিন্দার ঝড়েও তাদের কিছু যায়-আসে না। দেশের মানুষ যখন ভাঙাচোরা বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে দিনের পর দিন পথ চলে, তখন শুধু রাষ্ট্রীয় পদের সুবিধা নিয়ে দেশের অর্থে কেনা বিলাসবহুল গাড়িতে চড়ে বেড়ান পাবলিক সার্ভেন্টরা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us