পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের অগ্রে ও পশ্চাতে যে একটা সাংস্কৃতিক উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, সেটির পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও আইয়ুব খান সুবিধা পেয়েছেন। উন্মাদনাটা কাটতে সময় লেগেছে। আইয়ুবের আগমনের সময়ে মৌতাতটি বেশ বহালই ছিল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় লাহোর ও করাচিবাসীর মস্ত মস্ত উপকার হয়েছিল। পূর্ববঙ্গের মানুষও ভাবছিল ভালোই রয়েছে, হিন্দু জমিদার নায়েব-গোমস্তা মহাজন আমলা ব্যবসায়ীরা বিদায় হয়েছে। উন্মাদনার পরিচয় পাওয়া গেছে কলকাতায় শোনা তখনকার আওয়াজগুলোর একটিতে। সেটি ছিল, ‘কান মে বিড়ি মু মে পান লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান, কবুল হারাম জান পরাণ, আজাদ কারো পাক ওয়াতান।’ এই আবেগ যে পাকিস্তানের জন্মের পরেও জীবিত ছিল তার বহু প্রমাণ বিদ্যমান।
কবি তালিম হোসেনের মতো প্রখর বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিও পঞ্চাশের দশকে লিখেছিলেন, ‘জিন্দেগানীর আজাদীসনদ এনেছি আল কোরআন/ এনেছি দিশার আল-আমীনের তৌহিদী ফরমান’। এবং কবি এমন আশা অক্ষুন্ন রেখেছেন যে, ‘এবার হেথায় জালিমের দিন শেষ/ এবার হেথায় মানুষের ইন্সাফ;/ এ পাক-ওয়াতান চির-মানুষের দেশ,/ এখানে তাহার তকদীর আফতাব।’ জিন্নাহ সাহেব বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ‘পূজিবে তোমারে নহে শুধু মুসলিম/ পীড়িত বিশ্ব জানায় হে তসলিম।’