গত ২৯ ডিসেম্বর সমকালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের কদম রসুলপুর গ্রামে মাদ্রাসাছাত্রী কিশোরী মারুফা খাতুনকে ঘুম ডেকে নিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। দরিদ্র মারুফা ও তার ছোট বোন ঘুমিয়েছিল একসঙ্গে। ভোরে বড় বোনকে পাশে দেখতে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানালে খোঁজাখুঁজি করে পাশের জঙ্গলে মারুফার পোড়া লাশের সন্ধান মেলে। ধারণা করা হয়, মারুফাকে ধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা বর্বরোচিত ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমাদের স্মরণে আছে, ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে তারই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে গায়ে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই বর্বরোচিত ঘটনার দ্রুত বিচার হলেও দণ্ডিতদের আইনের সব ধাপ শেষ করে আজও দণ্ড কার্যকর করা যায়নি। ওই নৃশংস ঘটনার তিন বছরের মাথায় আবারও পৈশাচিক কায়দায় আরেক নারীকে হত্যা করা হয়! ৪ জানুয়ারি সমকালেই প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনে জানা গেল, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুই গারো কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। সম্প্রতি কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতেও ঘটেছে একই রকম ঘটনা।
দিনের পর দিন, একের পর এক ধর্ষণ আর হত্যা বা সংঘবদ্ধ ধর্ষণ বাংলাদেশে যেন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোথাও নিরাপদ নয় নারী-কিশোরী, তরুণী, এমনকি শিশুকন্যাও। চলন্ত বাসে ধর্ষণ, নির্জন পথ থেকে তুলে নেওয়া গার্মেন্ট শ্রমিক-তরুণী কিংবা বিশেষ এলাকায় কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ শেষে হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনকে আমাদের প্রশ্ন- এ যৌন নৈরাজ্য আর কত দিন ধরে চলবে বাংলাদেশে? এসব নিয়ে প্রতিবাদ, মানববন্ধন, ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন তো কম হয়নি। সংবাদপত্রে লেখালেখিও কম হচ্ছে না; তবু ঘটনা ঘটেই চলেছে। সামাজিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের পক্ষ থেকে না মিলছে জবাব, না দেখা যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রেই কার্যকর তৎপরতা।