বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের আগে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান এবং দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশই কৃষি তথা গ্রামীণ অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল ছিল। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ৮৫ শতাংশ লোক গ্রামে বসবাস করত। নগরায়ণের ফলে এই সংখ্যা কমতে কমতে এখন ৭০ শতাংশের মতো। একই সঙ্গে আমাদের দেশজ পণ্য উৎপাদনে কৃষি খাতের যে অবদান ৫০ শতাংশের ওপরে ছিল, সেটা ১৭ শতাংশে নেমেছে। এই সময়ে ছোট ও বড় শিল্প এবং সেবা খাত বিকশিত হয়েছে, কৃষি খাতে লোকসংখ্যা কমেছে, যা অর্থনৈতিক রূপান্তরের একটি প্রতিফলন। এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় আমাদের গ্রামীণ ও কৃষিনির্ভর লোকসংখ্যা দিন দিন কমছে। তবে কৃষি খাতের প্রয়োজনীয়তা কমেনি, বরং আরো বেড়েছে। সম্প্রতি জানা গেছে, সরকার আগামী বাজেটে কৃষি ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনবে। এমন একটা পটভূমি এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় আমাদের কৃষি নিয়ে আরো নিবিড় পর্যালোচনা দরকার।
যদিও বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ। তার পরও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি খাতের ওপর দেশের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ নির্ভরশীল। শস্য উৎপাদন, গবাদি পশু পালন, মৎস্য চাষ ও উদ্যান ফসল চাষসহ (হর্টিকালচার) সামগ্রিক কৃষি খাতের কথাই আমি বলছি। আরেকটি দিক হলো কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত। যেমন—কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করা। তৃতীয় আরেকটি দিক হলো কৃষিপণ্য তথা ফল ও শাক-সবজি রপ্তানি। আমাদের কৃষি খাত এবং কৃষি খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের সাফল্য আছে। তবে ঘাটতির জায়গাগুলোও খুব স্পষ্ট।