গত কয়েক দশকে রাজনীতিতে গুণগত বিরাট পরিবর্তন ঘটে গেছে। এখন একজন রাজনীতিক গণবিচ্ছিন্ন দূরের মানুষ, রাজনীতির মঞ্চ বা ময়দানে সাধারণের স্থান সংকুচিত এবং তাদের জন্য জানার তেমন কিছু থাকে না। রাজনীতি এখন সম্পন্ন মানুষের ক্ষমতাচর্চার এবং উচ্চাভিলাষীর সম্পদ ও ক্ষমতা অর্জনের অবলম্বন মাত্র। তাদের প্রয়োজন টাকা—সাদা বা কালো যা–ই হোক, প্রয়োজন বিত্ত, বৈধ বা অবৈধ যা–ই হোক, আর চাই ক্ষমতা—আদর্শ বা আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে হলেও তা চাই। সফল রাজনীতিকের লক্ষণ হলো তাঁকে ঘিরে থাকবে অসংখ্য উমেদার-চাটুকার ও কৃপাপ্রার্থী—তিনি যেন মৌচাক, ক্ষমতা ও বিত্তের ভান্ডার। এর বাইরে ক্ষমতাচর্চার জন্য তাঁর একটি অন্তরঙ্গ চক্র থাকে, যারা কর্মী হিসেবে পরিচিত হলেও প্রায়ই ক্ষমতার দাপুটে বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
জনসভায় শোনা যায় নেতাদের প্রশংসা, গুণগান এবং ভিন্ন দল ও নেতার প্রতি বিষোদ্গার। রাজনীতির অঙ্গন সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে, প্রেক্ষাপট গেছে হারিয়ে। বঙ্গবন্ধুকে তাঁর রাজনীতির বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে না রেখে ও না দেখে শতবর্ষে সঠিক মূল্যায়ন করা যাবে না। হয়তো কিছু প্রবন্ধে তা থাকছে, কিন্তু জনসাধারণের নাগালে যেসব কথাবার্তা পৌঁছাচ্ছে, তাতে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে আসল বঙ্গবন্ধুকে পাওয়া যাচ্ছে না।