১৯৮৩ সালের কথা। তখন সেবায় নিয়মিত লিখি। আর কোনো কাজ নেই, শুধুই বই লেখা। বাসায় বসে লিখতে লিখতে বিরক্ত হয়ে গেলাম। বৈচিত্র্য দরকার। ঠিক করলাম, অফিস করব। আমার পরিকল্পনার কথা সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেন সাহেবকে বললে তিনি হাসতে লাগলেন। তবে তাঁকে বোঝাতে সক্ষম হলাম এতে আমার লেখার পরিমাণ বাড়বে, কাজেও উৎসাহ পাব। তিনি আমাকে একটা ঘর দিলেন, চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা করে দিলেন। হাতের লেখা ভালো না বলে বাংলা টাইপরাইটারে লিখতাম। বাসায় একটা টাইপরাইটার ছিল, আরেকটা কিনে অফিসে রাখলাম। তারপর নিয়মিত টিফিন ক্যারিয়ারে ভাত-তরকারি নিয়ে সকালে উঠে ‘অফিসে’ যাওয়া শুরু করলাম। প্রায় বত্রিশ বছর আগের কথা, ঢাকা শহরে লোকসংখ্যা ছিল অনেক কম, রাস্তাগুলোর বেশির ভাগই থাকত প্রায় ঈদের ছুটির মতো ফাঁকা, যানজট দেখেছি খুবই কম, বাসে চড়তে হতো না, মিরপুর থেকে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতাম, তবুও এই ‘অফিস-বিলাস’-এর কষ্ট বেশি দিন ভালো লাগেনি। কয়েক দিন যেতে না যেতে নিজের কাছেই পাগলামি মনে হতে লাগল ব্যাপারটা। যাওয়া বন্ধ করে দিলাম। তবে তত দিনে যা ঘটার ঘটে গেছে, অর্থাৎ তিন গোয়েন্দার শুরু।