গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তায় চিরতরে হারিয়ে গেছেন কলামিস্ট বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী। প্রতি বৃহস্পতিবার তার কলাম প্রকাশিত হতো বাংলা ট্রিবিউনে। লেখার বিষয়বস্তু নিয়ে, শব্দচয়ন নিয়ে তিনি ছিলেন খুব সচেতন, কিন্তু বানানের ব্যাপারে তিনি ছিলেন উদাসীন। কিছু শব্দের বানান বছরের পর বছর একই রকম লিখে গেছেন। প্রায় অপ্রচলিত শব্দ লিখতেন তিনি, আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করতেন। শব্দের শুরুতে ‘ক’ এবং ‘খ’ বর্ণ থাকলে প্রায় সময় ‘ক’-এর জায়গায় ‘খ’ এবং ‘খ’-এর জায়গায় ‘ক’ লিখতেন। সে কারণে তার কলাম প্রকাশের আগে বেশিরভাগ সময়ে বানান আমাকে দেখে দিতে হতো। তিনি হাতে লিখতেন। সেটা কম্পিউটারে কম্পোজ করে আমাকে মেইল করতো কম্পোজার। সে হিসেবে তার কলামের প্রথম পাঠক ছিলাম আমি।
পড়তে পড়তে আমি অবাক হতাম কী করে একজন মানুষ এত তথ্য মাথায় রাখেন। কথা বলার সময়ও অবলীলায় দিনক্ষণ, নাম, ইতিহাস বর্ণনা করেন। আমি বলতাম আমাদের এনসাইক্লোপিডিয়া। যখনই আমি ইতিহাসনির্ভর কোনও লেখা লিখেছি বা টকশো করেছি, তার সঙ্গে প্রথম আলোচনা করেছি, সাহায্য নিয়েছি। বিশেষ করে উপমহাদেশের ইতিহাস যেন তার মুখস্থ। ভারতে ব্রিটিশ শাসন, দেশ বিভাগ, ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের বিগত দিনের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ইতিহাস তার মাথায় খোদাই করে রাখা ছিল। আমেরিকার ইতিহাস, ইউরোপের রাজনীতি, মধ্যপ্রাচ্য- সবকিছু জমা ছিল তার মস্তিষ্কের তথ্যভাণ্ডারে।