সময়টা ছিল ১৯৭১ সালের মার্চ মাস। আমি তখন ভারতের বিহার প্রদেশে অক্সফ্যামের অর্থায়নে ও মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে গড়ে তোলা গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচিতে কৃষি ও পশু পালনবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলাম। ভারতের সবচেয়ে উষ্ণ স্থান গয়ায় বসে কিছু স্থানীয় বাঙালি বন্ধু মারফত বাংলাদেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন ও সহিংসতার সংবাদ পাচ্ছিলাম আমরা। একাত্তরের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ যুদ্ধ [স্বাধীনতা] ঘোষণা করার পর থেকে অক্সফ্যামের পূর্ব ভারতীয় কার্যালয়ে টেলিগ্রামে হাজারো মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে ঢুকে পড়ার সংবাদ আসতে লাগল।
আমাকে তখন বিহারের সহকর্মীদের নিয়ে দ্রুত কলকাতায় চলে আসতে বলা হলো। তারপর ত্রিপুরা থেকে কলকাতা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সীমান্ত এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া ছয় লাখো নারী-পুরুষ ও শিশু শরণার্থীর জন্য যে বিপুল ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, তার সমন্বয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলো আমাকে।