বাংলাদেশের অগ্রগতিতে একটি প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয় মুদ্রাপাচারকে। মুদ্রাপাচার রোধে সরকারের বেশ কিছু বিশেষায়িত সংস্থা থাকলেও এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি নেই বললেই চলে। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৩৪টি দেশের মুদ্রাপাচারের তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৭৪ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত (২০১৪ সাল বাদে) ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে চার হাজার ৯৬৫ কোটি মার্কিন ডলার পাচার হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় চার লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৯০ টাকা হিসাবে)।
মুদ্রাপাচারের এই ধারা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। এর আগে জিএফআই ২০০৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের যে তথ্য দিয়েছিল তাতেও দেখা গিয়েছিল, সেই সময়ে দেশ থেকে ছয় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছিল। সুইজারল্যান্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের মুদ্রাপাচার বেড়েছে ২০ শতাংশ, পাচার হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। শুধু সুইস ব্যাংকেই নয়, আরো অনেক দেশের অনেক ব্যাংকেই বাংলাদেশ থেকে মুদ্রাপাচার হচ্ছে। মুদ্রাপাচারের স্বর্গভূমি হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন অফশোর ব্যাংকেও বাংলাদেশিদের অর্থ যাচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে ফাঁস হওয়া পানামা ও প্যান্ডোরা পেপারসেও অনেক বাংলাদেশির নাম এসেছে। কিন্তু মুদ্রাপাচার রোধে আমাদের কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।