মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রম শুধু একটি-দুটি দেশ নিয়ে চালিয়ে থাকে তা নয়। আমরা জানি, মানবাধিকারসহ বেশকিছু বিষয়ে জাতিসংঘভুক্ত ও বহির্ভূত দেশগুলো নিয়েও এমন কাজ তারা করে থাকে। তবে এর সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের আরও সংস্থা বা বিভাগ। অর্থাৎ সমন্বিতভাবে তারা কাজগুলো করে থাকে। এটা নতুন কিছু নয়। তবে জো বাইডেন ক্ষমতাসীন হওয়ার পর কিছু সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার-প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বিশ্বের গণতান্ত্রিক পরিবেশ, পরিস্থিতি ও মানবাধিকারের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ্য রেখে। বাইডেনের নীতিগুলো এ লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব বিষয়ে প্রতিবেদন দিয়ে থাকে তা শুধু তাদের রুটিন ওয়ার্ক নয়, তাদের নীতি ও ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক লক্ষ্যও এর সঙ্গে যুক্ত। তাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক পরিবেশে যুক্তরাষ্ট্রের যে নেতৃত্ব এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা বিষয়ে, বিশেষ করে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতার যে জায়গা তাও তারা আরও সমৃদ্ধ করতে চায়। সবার বাসযোগ্য একটি পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ের কথা বাইডেন শুরুতেই জোর দিয়ে বলেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বৈরী সম্পর্ক নয়, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান।
গত ১৬ ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়, সেখানে বাংলাদেশও রয়েছে। এর কাজের ভিত্তি আরও এক বছর আগের প্রেক্ষাপটে তৈরি। ২০২০ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার তথ্য দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। তারা তাদের বিভিন্ন মাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমসহ অন্য সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তৈরি ওই প্রতিবেদনে যে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে তাতে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তুলনায় বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমেছে। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী ব্যুরোর তৈরি ওই প্রতিবেদনে এও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা দুর্বল, যে কারণে সন্ত্রাসবিরোধী মামলাগুলোয় জট তৈরি হয়েছে। আমরা জানি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ওই ধারাবাহিক সরকারের 'শূন্য সহিষ্ণুতা'র অঙ্গীকার রয়েছে। এ লক্ষ্যে আমাদের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে আরও শক্তিশালী করতে সরকার উদ্যোগও নিয়েছে। আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা আছে তা আমরা যেমন জানি, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও জানে। তার পরও বলব, এ ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক যে অগ্রগতি আমরা লক্ষ্য করছি তা স্বস্তির।