বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তার ঐতিহাসিক ভাষণের শেষে ঘোষণা দেন 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।' জনগণের সামনে এ ঘোষণাই ছিল বাংলাদেশকে নিয়ে তার দর্শন। তিনি স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামকে কল্পনা করেছিলেন একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম হিসেবে, যা ছিল সহজে বোধগম্য একটি লক্ষ্য এবং যা অন্যান্য জাতিরাষ্ট্রকে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার সংগ্রামে উৎসাহ দিয়েছিল। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর আহ্বান ছিল সংক্ষিপ্ত এবং একই সঙ্গে সুদূরপ্রসারী।
এটি শুধু পাকিস্তানি শাসনের অন্যায্য প্রভাব থেকে নয়, শতাব্দীকাল ধরে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর যে অন্যায় হয়েছে, তা থেকে মুক্ত করার মিশন ছিল। রক্তক্ষয়ী জন্মের আঘাত সামলে বাংলাদেশ গত ৫০ বছরে এর অর্থনীতিকে অসাধারণ উচ্চতায় নিয়ে গেছে। উল্লেখযোগ্য সামাজিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেছে এবং অধিকতর বিশ্বায়িত পৃথিবীতে নিজের অবস্থান পুনর্গঠন করেছে। এসবের অনেক কিছুই হতো না, যদি আমরা স্বাধীনতার পরপরই যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেরিয়ে জনগণের পুনর্জাগরণ ঘটাতে না পারতাম, প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুলতে পারতাম এবং বিশ্ব দরবারে নিজেদের তুলে ধরতে না পারতাম। বিরূপ পরিস্থিতিতে সীমিত সম্পদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার তিন বছরের মধ্যে এ ধরনের পুনর্জাগরণ দেখা যায়।