একাত্তরে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের নজর কেড়ে বিস্ময় হয়েছিল। বিশ্বকে তাক লাগিয়ে সংক্ষিপ্ততম মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। ভারতের সাহায্য-অংশগ্রহণ বিজয়কে এগিয়ে নিয়েছিল ঠিকই; আবার এটাও ঠিক, ভারতের অংশগ্রহণহীন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ প্রলম্বিত হতো। তবে আমাদের বিজয় অবধারিত ছিল। ব্যাপারটি যুদ্ধ-পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলেই বোধগম্য হবে।
আমার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এমন অভিমত জানিয়েছিলেন। সমরবিদ অরোরার সঙ্গে সহমত না-হলেও, তাঁর মতকে তো উপেক্ষা করা অসম্ভব। লড়াকু বাঙালির বিজয় ছিল ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর, যা ছিল তাদের সক্ষমতার প্রথম প্রকাশ। এ বিজয়কে রুখে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আর চীনের গলদঘর্ম হওয়ার কাহিনি তো সবার জানা। বলা যায়, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বাংলাদেশ একাত্তরেই তার সক্ষমতা জাহির করেছিল। আরও বলা যায়, যাত্রার শুরুতেই বাংলাদেশ ও দেশের মানুষ বিশ্বকে আশ্বস্ত করেছিল যে, তারা পারে। বোধগম্য, বঙ্গবন্ধু কেন তাঁর মানুষকে এত ভালোবেসেছিলেন। নেতা-জনতার পারস্পরিক ভালোবাসার দ্রাবক রসে সিঞ্চিত হয়ে বাংলাদেশের প্রথম সক্ষমতার প্রমাণ তৈরি হয়েছিল। সুতরাং বাংলাদেশের জন্মই তার অন্তর্লীন সক্ষমতার প্রমাণ।