আত্মনির্ভরশীল একটা জাতি গঠনে শিক্ষা অতিপ্রয়োজনীয় একটা কনসেপ্ট। এই শিক্ষা গ্রহণ নানামুখী ও নানা মাত্রায় হয়ে থাকে। আমাদের দেশে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা ইত্যাদি বহুমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত আছে। একটা নির্দিষ্ট বয়স ও সময় পর্যন্ত এই শিক্ষা গ্রহণ করা মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত আছে। কিন্তু এখন প্রশ্নটা হলো, উচ্চশিক্ষা শিক্ষার বিষয়ে পরিকল্পনা প্রসঙ্গে। দেশে ৫২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কয়েক লাখ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩২ লাখ তরুণ-তরুণী নানা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে বের হচ্ছেন। এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রথম দিকে তিন বছরের অনার্স ও এক বছরের মাস্টার ডিগ্রির সময়সীমা ছিল। পরে আন্তর্জাতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চার বছরের অনার্স ও এক বছরের মাস্টার ডিগ্রি করা হয়। ভাবা হয়েছিল একজন শিক্ষার্থী চার বছরের অনার্স সম্পন্ন করে যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন কর্মে তাঁরা নিযুক্ত হবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো ছোট-বড়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেখানে শিক্ষিত লোকবল প্রয়োজন, সেখানে তারা অনার্স ডিগ্রির পাশাপাশি মাস্টার ডিগ্রির চাহিদা উল্লেখ করে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা শুরু করল। ফলে সেশনজটের জাঁতাকলে নিষ্পেষিত নিম্নবিত্ত ঘরের শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করা শুরু করলেন। কিন্তু এই যে মাস্টার ডিগ্রি করা উচ্চশিক্ষিত হাজার হাজার তরুণ-তরুণীকে আমরা তৈরি করছি, সেটা কতটুকু পরিকল্পনাসম্মত সেটা বিবেচনা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।