মাতৃভূমি ও তার স্বাধীনতা প্রাণের চেয়ে প্রিয়। একাত্তরের যুদ্ধক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধারা অকাতরে প্রাণ দিয়ে এ কথাটির সত্যতা আবার প্রমাণ করেছেন। প্রতিটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বপ্ন ছিল নিজের জীবনের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলে ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে জীবনবাতিটি নিভে যাওয়ার আগ মূহূর্তে প্রত্যেক শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সঙ্গী জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চিৎকার করে বলেছেন, 'আমি শত্রুর গুলির আঘাতে মরে যাচ্ছি, কিন্তু তোরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবি, আমার কথা ভাবিস না।
আর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ফিরে গিয়ে ছেলেমেয়েদের বলবি, তাদের ভবিষ্যতের জন্য আমরা আমাদের বর্তমান দিয়ে গেলাম।' পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপারেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আগ মূহূর্তে আমরা গ্রুপের সকলে একসঙ্গে দাঁড়িয়ে একবার জাতীয় সঙ্গীতটি গেয়ে নিতাম। 'মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি'- এ লাইনটি গাইতে গাইতে সকলের চোখ থেকে ঝরঝর করে নেমে আসা পানিতে বুক ভেসে যেত। তাতে আমরা দুর্বল হতাম না। বরং প্রচণ্ড মানসিক শক্তি পেতাম।