ডিসেম্বর বাঙালির অহঙ্কারের মাস, বিজয়ের মাস। আবার দারুণ কষ্টেরও মাস। এ মাসেরই ১৬ তারিখে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে যৌথবাহিনীর কাছে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ করেছিল। আবার এ মাসেরই ১৪ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিভাবান শিক্ষকবৃন্দসহ অনেক বুদ্ধিজীবীকে হানাদার পাকিস্তানিদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের বিশেষ গেস্টাপো বাহিনী নৃশংসভাবে হত্যা করে। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের এই হত্যাকা- বিজয়ের আনন্দকে ম্লান করে দেয়। তবু সেদিন লাখো মুক্তিকামী মানুষ বিজয়ের সুবাতাস বুকে নেওয়ার জন্য মনের কষ্ট মনেই রেখে রাস্তায় বের হয়ে এসেছিল। সেদিনের রেসকোর্স হয়ে উঠেছিল বিজয়ের ঠিকানা। তখনো বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানে বন্দি। তাই আমাদের বিজয় ছিল অপূর্ণ। আমাদের অসামান্য মুক্তিযুদ্ধ বিশ্ববিবেককে এমনই নাড়া দিয়েছিল যে, তার চাপে পরাজিত পাকিস্তানি অপশক্তি খুব বেশিদিন বাংলাদেশের আরেক নাম আমাদের জাতির পিতাকে আটকে রাখতে পারেনি। এ ডিসেম্বরেই সেই মহামানবের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হবে। কোভিডের কারণে আমরা যেমনটি চেয়েছিলাম, তেমন করে মুজিববর্ষ পালন না করতে পারলেও দেশে ও বিদেশে অনলাইনে তাকে ঘিরে কম অনুষ্ঠান হয়নি। লেখকরাও ঘরবন্দি থেকেও মনের আনন্দে তার ওপর কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নাটক লিখেছেন। বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে তরুণ লেখকদের উৎসাহ ছিল আরও বেশি। তাদের সব লেখাই হয়তো কালের কষ্টিপাথরের ঘষায় টিকবে না। তাই বলে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তাদের এ অন্তহীন আগ্রহকে কিছুতেই খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। তাকে নিয়ে কত যে ওয়েবিনার হয়েছে মুজিববর্ষজুড়ে, তা বলে শেষ করা যাবে না। এখানেও তরুণদের আগ্রহই ছিল দেখার মতো। আমাদের পত্রপত্রিকাও বসে ছিল না। প্রতিনিয়তই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু না কিছু একটা প্রকাশ করেছে তারা। দৈনিক আমাদের সময়ও ছিল এ ব্যাপারে খুবই সক্রিয়। অন্যান্য প্রকাশনার পাশাপাশি তারা প্রতি সপ্তাহে ‘আমাদের স্বপ্নের সম্রাট’ নামের আমার একটি কলাম ছেপেছে মুজিববর্ষজুড়ে।