ঊনবিংশ শতাব্দীতেই কার্ল মার্ক্স লিডউইক কুগেলম্যানের কাছে লেখা এক চিঠিতে বলেছিলেন (১৮৬৮ সাল), ‘ইতিহাস সম্পর্কে যাঁর কোনো ধারণা আছে তিনিই জানেন যে নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো বড় সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব নয়।’ আমরা দেখেছি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীর বিশাল অবদান ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশ্বকে বিস্মিত করেছে, সেখানেও নারীর অবদান সর্বাধিক। সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আনছে যে খাত, সেই পোশাকশিল্পের ৮০ শতাংশ নারী। অন্যান্য উৎপাদন খাত ও সেবা খাতেও নারীর সদম্ভ উপস্থিতি আমরা লক্ষ করতে পারি। আমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে নারীর বিরাট অবদান রয়েছে। কিন্তু তা সামাজিকভাবে স্বীকৃত নয়। বরং সমাজজীবনে নারী চরমভাবে অবহেলিত, উপেক্ষিত ও নির্যাতিত। ওপরে উল্লিখিত একই চিঠিতে কার্ল মার্ক্স পরের যে বাক্যটি লিখেছিলেন সেটা অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেছেন, ‘নারীর সামাজিক অবস্থান দ্বারাই সমাজ প্রগতির মাত্রা নির্ধারণ করা চলে।’ আমরা যদি মার্ক্সের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হই, তাহলে দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হব যে আমাদের সমাজ অনেক পিছিয়ে আছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বহুবিধ রাজনৈতিক সংগ্রামের পরও সমাজের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি।