তবু সিলেট বিএনপিতে হা-হুতাশ

মানবজমিন প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০

মাঠে কর্মী বাড়াতে ভিন্ন কৌশল নিয়েও সমালোচনার মুখে সিলেট বিএনপি। জেলা ও  মহানগরের কর্মসূচিতে কর্মী সমাগম নিয়ে সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও। কম সংখ্যক কর্মী কর্মসূচিতে কর্মী উপস্থিত হওয়ায় নেতাদের গাফিলতিকে দায়ী করছেন কেউ কেউ। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে ডাকা কর্মসূচিতেও স্বতঃস্ফূর্ত কর্মীর উপস্থিতি নেই বলেও দাবি করেছেন তারা। অন্যদিকে- জেলা ও মহানগর বিএনপিসহ অঙ্গ সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া চলছে। এই অবস্থায় কর্মী সংকটকে অশনি সংকেত বলেও মনে করছেন কেউ কেউ। সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি তিনদিনের ব্যবধানে দুটি কর্মসূচি পালন করেছে। সর্বশেষ গত শনিবার তারা অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। জেলা ও মহানগর বিএনপি’র দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন; সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি দুটি আলাদা ইউনিট। এ কারণে দুটি ইউনিটই কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করার কথা। কিন্তু এতদিন সিলেট বিএনপি’র নেতারা একীভূত হয়েই কর্মসূচি পালন করতেন। এবার মহানগর বিএনপি’র নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর ফরমেটে পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলা ও মহানগর কমিটি পৃথক ভাবেই তারা তাদের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। গত শনিবার সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠে জেলা ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহানগরের নেতারা অনশন কর্মসূচি পালন করেন। দুই কর্মসূচিতে আগের তুলনায় বেশি সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেছেন নেতারা। কিন্তু গত দু’দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কর্মসূচিতে উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনা চলছে। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিতির সমালোচনা করছেন। কেউ বলছেন; দুটি কমিটি, রয়েছে অঙ্গসংগঠনও। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর সমন্বয়ে কমিটিগুলো গঠন করা হলেও উপস্থিতি হতাশ করেছে। আবার কেউ বলছেন- সিলেট বিএনপি ক্রমেই শক্তিহীন হয়ে যাচ্ছে। দলের চেয়ারপারসনের চিকিৎসার দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচিতে কম সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি এটাই প্রমাণ করে। কেউ কেউ দলের শীর্ষ নেতাদের গাফিলতিকেও দায়ী করেছেন। ঠিকমতো কর্মসূচি না জানা এবং নেতারা সরব না হওয়ার কারণে কর্মসূচিতে লোক সমাগম হচ্ছে না বলে দাবি করেন তারা। এদিকে- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি’র কর্মসূচি নিয়ে কথাবার্তা বলায় নেতারাও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। তারা আজকের কর্মসূচিতে লোক সমাগম ঘটাতে গতকাল বিকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন। নেতারা জানিয়েছেন; এই আন্দোলন দলের চেয়ারপারসনের জন্য। এ কারণে তারা তৃণমূল পর্যন্ত দাওয়াত পৌঁছাচ্ছেন। ধীরে ধীরে নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে- কর্মসূচিতে নেতাকর্মী কম উপস্থিত হওয়ার অজুহাত মানতে নারাজ সিলেট মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী। তিনি গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- মানুষ কোথায় কম। আগে দুই ইউনিট একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করেছে। এখন দুই ইউনিট পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করছে। আগের চেয়ে এখন দ্বিগুণ নেতাকর্মী উপস্থিত হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। মিফতাহ জানান- সিলেট বিএনপিতে এখন আর আগের মতো বিরোধ নেই। জেলা ও মহানগরের সবাই কিন্তু একসঙ্গেই রয়েছেন। কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে পৃথকভাবে। এতে কর্মী বাড়ানোর প্রতিযোগিতা চলছে। বিষয়টিকে নেগেটিভ ভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা আশাবাদী দলের চেয়ারপারসনের জন্য কর্মসূচিতে সবাই মাঠে ঐক্যবদ্ধ হবেন। যারা ফেসবুকে এসব মন্তব্য করছে তারা নিজেরাও কর্মসূচিতে আসছে না বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন- পুলিশের অনুমতি নিতে বিলম্ব হওয়ার কারণে হয়তো সময় ও স্থান আগেভাবে বলা যায় না। এ নিয়ে আমরা ভাবছি। আগে থেকে নেতারা আরও সক্রিয় হচ্ছেন বলে জানান তিনি। এদিকে- সিলেটের বিএনপি’র অভিভাবক হিসেবে এখন মাঠে সরব রয়েছেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি নিজে সিলেটে এসে কর্মসূচি পালনের বিষয়টি তদারকি করছেন। গত শনিবার তিনি কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। ফলে মুক্তাদিরই এখন সিলেট বিএনপি’র ভরসা। তার সঙ্গে কর্মসূচিতে এসে শরিক হচ্ছে কেন্দ্রীয়সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকও। সপরিবারে ওমরা পালনে গত শনিবার সৌদি আরবে গেছেন সিলেট বিএনপি’র আরেক নিয়ন্ত্রক ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আগামী দুই সপ্তাহ তিনি সৌদি আরবে অবস্থান করবেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। এ কারণে চলমান কর্মসূচিতে আরিফুল হক চৌধুরী উপস্থিত নেই। তার উপস্থিত না থাকাকেও অনেকেই আঁড় চোখে দেখছেন। প্রশ্ন উঠেছে; আরিফ ও মুক্তাদিরের মধ্যে চলমান বিরোধ এখনো কী বহমান আছে। তবে- আরিফুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন- মেয়র ওমরাহ পালনে যাবেন সেটি অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। কয়েকদিনে সব প্রক্রিয়া শেষ করে মেয়র ওমরাহ পালনে গেছেন। তিনি তো আর হঠাৎ করেই যাননি। ফলে মেয়রকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠার সুযোগ নেই বলে জানান তারা। সিলেট বিএনপি’র আরেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি হচ্ছেন এডভোকেট শামসুজ্জামান। নিজ থেকে পদত্যাগের পর থেকে তিনি দলীয় কর্মসূচিতে আসছেন না। তার অনুসারীরা এখন ব্যস্ত সামাজিক প্ল্যাটফরম ‘সরিডারিটি মুভমেন্ট’ নিয়ে। সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি কর্মীরা জামানকে ঘিরেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ কারণে সিলেট বিএনপি’র কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। জামানের লোকজন জানিয়েছেন; এডভোকেট জামান তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ওই সংগঠনে বেশি সময় দিচ্ছেন। পাশাপাশি জৈন্তাপুর এলাকায় তিনি সফরে যাচ্ছেন। সংগঠনের সিনিয়র নেতা আলতাফ হোসেন বিলালের নির্বাচনী প্রচারণায় যোগ দিচ্ছেন। এর বাইরে জামান এখন নিয়মিত কোর্টে গিয়েও প্র্যাক্টিস করেন। তবে- সিলেট জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার, কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলার সাবেক সভাপতি নাসিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইনসহ বর্তমান দায়িত্বশীল নেতারা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। দলের নেতারা জানিয়েছেন- ইউনিয়ন পরিষদ চলমান থাকার কারণে কেউ কোনো বাড়াবাড়ি করছেন না। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কর্মূসচি পালন করছে।
সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us