গোটা মানবজাতির জন্য এখন সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন। দাবানল, অতিবৃষ্টি, খরা, বন্যায় পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ বিধ্বস্ত, অস্বাভাবিক মাত্রায় গরম হয়ে উঠছে পৃথিবী। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, চলতি দশক শেষ হওয়ার আগেই তা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বিপদসীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্তঃসরকার সংগঠন ‘আইপিসিসি’-র সাম্প্রতিক রিপোর্টে বিপর্যয়ের আঁচ দেওয়া হয়েছে। তিন হাজার পৃষ্ঠারও বেশি দীর্ঘ এই রিপোর্ট তৈরি করেছেন ২৩৪ জন বিজ্ঞানী। তারা দেখিয়েছেন, ক্রমশ দ্রুততর হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন, যার ফলে জলবায়ু সংক্রান্ত বিপর্যয়ের ঘটনা বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে একই সঙ্গে ঘটে গিয়েছে দাবানল, খরা ও তাপপ্রবাহ। এই ধরনের ঘটনা এখন বাড়তে থাকবে বলেই অনুমান। মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে বিশ্ব উষ্ণায়ন যত বাড়বে, তত বৃদ্ধি পাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা, গলে যাবে মেরু অঞ্চলে বরফের আবরণ, আর বেড়ে চলবে তাপপ্রবাহ, খরা, বন্যা ও ঝড়ের মতো আবহাওয়ার চরম আচরণ। রিপোর্ট জানাচ্ছে, যে ধরনের তাপপ্রবাহ অর্ধশতকে এক বার হতো, তা এখন প্রতি দশকেই দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের তাপমাত্রা আর ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেই এমন ঘটনা প্রতি সাত বছরে দু’বারও ঘটতে পারে। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কার্যক্রমের (ইউএনইপি) কার্যনির্বাহী প্রধান ইঙ্গার অ্যান্ডারসন আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এখন ঘোর বাস্তব। কেউই নিরাপদ নন। এত বছর ধরে সতর্কতার পরেও কেউ কথা শোনেননি। এবার নড়েচড়ে বসতেই হবে।’ বিশ্বজুড়েই বিশেষজ্ঞদের সতর্কবাণী শোনা যাচ্ছে।