কয়েক দিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির-বাড়িঘরে হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর আমাদের লেখায়, সংবাদমাধ্যমের খবর পরিবেশনায় ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটি বারবার ব্যবহার করায় অনেক বন্ধু বা পাঠক আপত্তি জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমরাও এ দেশের নাগরিক। আমরা সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু অভিধায় চিহ্নিত হতে চাই না।’ তঁাদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আমরা সবচেয়ে খুশি হতাম সংখ্যালঘু শব্দটি ব্যবহার করতে না পারলে। কিন্তু আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে আলাদাভাবে শনাক্ত করতে এটাই সম্ভবত সবচেয়ে মার্জিত ও নিরীহ শব্দ। অন্য যেকোনো শব্দ ব্যবহার করলে ধর্মীয় বিভাজনটি আরও বেশি ক্লেদাক্ত হয়ে সামনে আসে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর প্রশ্নটি আসেনি। এ দেশের মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বাঙালি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে যার যার অবস্থান থেকে, যার হাতে যা আছে তা-ই নিয়ে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। সেটা ছিল গণযুদ্ধ। ফলে সে সময়ে কেউ প্রশ্ন করেননি, ‘আপনি কোন ধর্মের বা সম্প্রদায়ের মানুষ?’ কেউ জানতে চাননি, ‘আপনি কোন দল করেন?’ তখন সবার একটিই দল ছিল, যার নাম বাংলাদেশ।