বদর ফরাজির মুখের রঙ পাল্টে গেল। কী আশ্চর্য কারবার! এরা তাকে বাংলাদেশে মহাকাশ গবেষণার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রশ্ন করছে! সে পড়াশোনা করেছে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে। আকাশের মেঘমালা ও নক্ষত্ররাজি নিয়ে তাকে ছড়া বা কবিতা লেখার কথা বলা যেতে পারে। মহাকাশ গবেষণার সে কী বোঝে? আজকের ইন্টারভিউ নিয়ে বদর ফরাজি খুবই আশাবাদী ছিল।
এখন মনে হচ্ছে ফালতু কাজে সে সারাদিন ধরে এখানে বসেছিল। এদেশে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে মামা-খালুর একটা ব্যাপার আছে। টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়েও নানা কথা শোনা যায়। এ সিস্টেমে তলে তলে নিয়োগের কাজ শেষ করে ফেলা হয়। ওপরে ওপরে পত্রিকায় বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নানা টেস্ট- ফেস্টের আয়োজন করা হয়। সবই লোক দেখানো ব্যাপার। আই ওয়াশ। ইন্টারভিউ বোর্ড থেকে বের হওয়ার সময় বদর ফরাজির খু্বই ইচ্ছে হলো জিজ্ঞেস করে,
: স্যার, সিলেকশন কি হয়ে গেছে?
সমস্যা হলো, এ ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না। ইন্টারভিউ বোর্ডে নিয়োগ প্রত্যাশী যুবক আর পাত্রপক্ষের সামনে বিবাহ প্রত্যাশী যুবতীর মুখে কেউ কোনো প্রশ্ন আশা করে না। প্রশ্নের উত্তর শুনতে চায়। বদর ফরাজি শাহবাগ এসে বাস থেকে নেমে পড়ল। মেসে ফিরে খাওয়া-দাওয়া করে একটা জালালি ঘুম দিতে পারলে তোফা হতো। এখন মেসে যাওয়া যাবে না। তিন মাসের মেসভাড়া বাকি পড়েছে। আজ ভাড়া দে্ওয়ার ফাইনাল তারিখ। চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে এক মাস সময় বাড়ানো কোনো ব্যাপার ছিল না।