১৭৫৭ সালের প্রাহসনিক যুদ্ধ জয় শেষে ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হওয়ার পর স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্রিটিশ শাসন প্রবর্তিত হতে থাকে ভারতজুড়ে। তখন রাজধানী নির্ধারিত হয় কলকাতা। প্রশাসনিক আইন-কানুন প্রতিষ্ঠার জন্য অনেকের সঙ্গে লর্ড মেকলে ইউরোপ থেকে কলকাতা আসেন। তিনি বাংলার মানুষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে বাঙালি চরিত্রের কিছু বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেন। উদ্দেশ্য নিজেদের সেরা ভাবা এবং বাঙালি চরিত্রে নীচতার শিরোপা পরানো। মেকলে সাহেব বলতেন, বাঙালি ছিদ্রান্বেষী, পরশ্রীকাতর, মোসাহেব ইত্যাদি। তার পর্যবেক্ষণ শুধু বাঙালির নয়, মানব চরিত্রেরই বটে। এর তারতম্য বিচারে কেউ সেরা, কেউ সেরা নয়। তবে আমাদের মোসাহেবিপনা যে চরমে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে না। আর এসব মোসাহেবি ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের জন্য। তাতে দেশ ও জাতি রসাতলে গেলেও কারো দ্বিধা থাকে না। এ তথ্যের সঙ্গে একটি সত্য নিহিত চাটুকারদের কাঁধে পা রেখে ব্রিটিশরা ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পাকিস্তানিরা অনেকটা নির্বিঘ্নে সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। সুতরাং মোসাহেবরা বোধ করি তাদের লেখায় প্রশংসার্হ হওয়ার কথা ছিল। ইতিহাস নির্মম, তা হতে দেয় না। একটা সত্য সবার জানা, মোসাহেব যেমন অন্তঃসারশূন্য ব্যক্তিস্বার্থ অন্বেষী, তেমনি মোসাহেবের ইচ্ছা পূরণকারী নিজেকে ক্ষমতায় দেখতে পেলেই ডগমগ। দেশ ও জাতির কথা এদের মাথায় আসে না।