১৯৯০ সালের অক্টোবরে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙার একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে একটি পত্রিকার উসকানিতে। তখন ফেসবুক ছিল না, কিন্তু এর প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। ঢাকায় সাপ্তাহিক বিচিত্রার আরামদায়ক অফিসে বসেও আমরা তা টের পাই দ্রুত। আমাদের সবার প্রিয় ছিলেন যিনি, সদাহাস্যময়, বন্ধুভাবাপন্ন, বিচিত্রার একঝাঁক উচ্চাকাঙ্ক্ষী কিংবা আত্মম্ভরি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে যিনি নির্বিরোধ, দেখি তাঁর মুখ ঢেকে গেছে উদ্বেগ আর ভীতির অন্ধকারে।
তিনি যে একজন ‘হিন্দু’ধর্মাবলম্বী, হঠাৎ যেন সেটি এক কর্কশ উপলব্ধির বিষয় হয়ে দাঁড়াল। আমাদের সেই প্রিয় মানুষটি ভয়ংকর কিছুর শিকার হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে অসময়ে বাসার দিকে রওনা হলেন। তাঁকে পৌঁছে দিতে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে তরুণ বয়সের সাহস নিয়ে আমিও।
তাঁর রামপুরার বাসায় থাকেন বউদি আর দুটি ফুলের মতো মেয়ে। বাসার দরজা খোলা হলো ভয়ে ভয়ে। বিকেল আর সন্ধ্যা কাটল চমকে ওঠা আতঙ্কে। রাস্তায় মানুষের মিছিল, কোথাও একটা পটকার আওয়াজ, ওপরের ফ্ল্যাটে চেয়ার টানার শব্দ, সবকিছুর লক্ষ্য যেন তাঁরা। দুই মেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল, দাদা আর বউদির সঙ্গে আমি থাকলাম কিছুক্ষণ ভয় তাড়ানো আড্ডার ছলে।